সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের মর্মান্তিক ঘটনার পর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের পায়ে হেঁটে ফিরতে বারণ করা হয়েছে। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, সরকার ব্যবস্থা করছে বলে। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে ঠিক কতটা সাহায্য তাঁরা পাচ্ছেন সেটাই পরিষ্কার হচ্ছে না কারোর কাছে। বুঝতে পারছে না সাধারণ নাগরিকরাও। আর তার ফলে থামছে না পরিযায়ী শ্রমিকদের পথচলাও। রোদ, ঝড় ও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বাড়ি ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁদের মতোই পাঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে বিহারের বাড়িতে ফেরার দুঃসাহস দেখিয়ে ছিলেন ২৫ বছরের যুবক অশোক কুমার। কিন্তু, কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির টানাপোড়েনে চুরমার হয়ে গেল তরতাজা ওই যুবকের বাড়ির ফেরার স্বপ্ন। মাঝরাস্তাতেই তাঁকে পিষে দিয়ে পালিয়ে গেল একটি গাড়ি। মঙ্গলবার ভোরে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পাঞ্জাবের আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট (Ambala Cantonment) এলাকার কাছে অবস্থিত আম্বালা-জাগাদরি হাইওয়ের উপর।
মৃত শ্রমিকের সঙ্গীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, তাঁরা পাঞ্জাবের লুধিয়ানা একটি কারখানাতে কাজ করতেন। লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে কারখানার মালিক সবাইকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকেই ওই শ্রমিকদের থাকা ও খাওয়ার বন্দোবস্ত নিজেদেরই করতে হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে তাঁরা বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় নিজেদের বাড়িতে ফেরার পরিকল্পনা নেন। ট্রেনে বুকিং করার চেষ্টা করেও সফল হননি। বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই পরিকল্পনা মতো দুদিন আগে লুধিয়ানা থেকে রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করেন। মঙ্গলবার ভোরে আম্বালা ক্যান্টনমেন্টের কাছাকাছি এলাকায় আচমকা অশোক কুমার ও তাঁর পাশে হেঁটে যাওয়া অন্য শ্রমিককে চাকার তলায় পিষে দিয়ে পালিয়ে যায় একটি গাড়ি। এর জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অশোকের। আর গুরুতর জখম হন অন্য শ্রমিকটি। কিছুক্ষণ পরে প্রশাসনের সাহায্য তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করার হয়।
আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার পরে ঘাতক গাড়িটিকে নিয়ে পালিয়ে যায় তার চালক। এই বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঘাতক ওই গাড়িটি এবং তার চালকের সম্পর্কেও কিছু তথ্য জানা গিয়েছে। আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি মৃতের বাড়ির লোককে খবর দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত হয়ে গেলেই অশোক কুমারের মৃতদেহ তাঁর পরিবারের লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.