ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে করোনা মহামারী। রাতের অন্ধকারে সার দিয়ে বোঝা মাথায় হেঁটে চলা পরিযায়ীদের দৃশ্য কখনও ভুলবার নয়। যথারীতি এ নিয়ে রাজনীতির ময়দানে তুমুল লড়াইও চলছে। এহেন পরিস্থিতিতে নবান্নের অস্বস্তি বাড়িয়ে মঙ্গলবার বম্বে হাই কোর্ট সাফ জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি সঠিকভাবে সামলাতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
মহারাষ্ট্রে ভিন রাজ্যের পরিযায়ীদের নিয়ে শ্রমিক সংগঠন ‘Centre of Indian Trade Unions’-এর (CITU) দাখিল করা একটি পিটিশনের ভিত্তিতে এদিন শুনানি শুরু হয় বম্বে হাই কোর্টে। ওই পিটিশনে বলা হয়েছিল, মহারাষ্ট্র সরকারের নিয়ম মাফিক শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে চাপার জন্য পরিযায়ীদের নাম নথিভুক্ত করানোর প্রক্রিয়াটি জটিল। এটাকে আরও সহজ করা উচিত। এর ফলে ভোগান্তি হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী গায়ত্রী সিং অভিযোগ জানান, সমস্ত পরিযায়ীরা ঘরে ফিরে গিয়েছে বলে সরকার যে দাবি করছে, তা মিথ্যা। এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে অন্তত ৫৬ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক আটকে রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।
এদিন, শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দুত্ত ও বিচারপতি অনুজা প্রভুদেশাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ বলে, পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি সঠিকভাবে সামলাতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শুধু তাই নয়, ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, “আপনি কি পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি জানেন? একসময় তো তারা পরিযায়ীদের ফেরত নিতে চায়নি। আমরা কারও বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারটা সামাল দিতে পারেনি।”
দেশের সংবিধানে সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে কিন্তু তা যে বহু দূরের স্বপ্ন, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে করোনা। মহামারী পরিস্থিতি নিয়ে গত মাসে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলাকালীন এমনই মন্তব্য করেছিল বম্বে হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছিল, করোনা সঙ্কট এবং লকডাউন দেশের অর্থব্যবস্থার মূলে আঘাত হেনেছে। দেশে পরিযায়ী শ্রমিকরা কী করুণ অবস্থায় রয়েছেন, তা সকলের সামনে তুলে ধরেছে। এই পরিস্থিতিতে অদূর ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ সমাজ ব্যবস্থার কথা ভাবাই যায় না। এবার ফের পরিযায়ীদের দুর্দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করল আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.