সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খাবার নেই, নেই টাকা। তাই করোনা সংক্রমণের ভয়কে উপেক্ষা করে তারা হেঁটে চলেছেন এক স্থান থেকে অন্যত্র। লকডাউনের আয়ুকাল বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল সমস্যার মুখে পরিযায়ী শ্রমিক-সহ তাঁদের পরিবার (Migrant Families)। অরুণাচল প্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি পরিবার শুধুমাত্র খাবারের আশায় পৌঁছে যায় অসমের সীমান্ত পর্যন্ত।
অরুণাচল প্রদেশের বছর ৩৮-এর সলমন দরজি, আজ সকালেই স্ত্রী ও দুই সন্তানেক নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন খাবারের আশায়। ৫-৬ কিলোমিটার হাঁটা হয়ে গেলেও থেমে যাননি। লক্ষ্য কোনও স্থান নয়, লক্ষ্য একটু খাবার। লকডাউনের জেরে টানা ২১ দি ধরে বন্ধ কাজ। ফলে চরম দারিদ্রতার মুখে পড়ছেন গরিবেরা। চান দেখা দিয়েছে তাদের ভাড়ারে। অভাবের জেরে পেটে কিল মেরে থাকেলও সন্তানের খাবারের জোগাড়েও রাস্তায় কাজ খুঁজতে যেতে পারছেন না। বেরিয়ে সোচ্চার হতে পারছেন না অভাবের কথা বলে। লকডাউনের জেরে কাজ চলে যাওয়ায় অরুণাচলে বাড়ি ভাড়া দিতে পারেননি সলমন দরজি। তবে এমতাবস্থায় তাঁকে মানবিকতা দেখাননি তাঁর বাড়িওয়ালা। লকডাউনের মধ্যেই তাঁর দুটো ছোট বাচ্চা সমেত বের করে দিয়েছেন বাড়ি থেকে। ফলে বাচ্চাদের কাঁধে চাপিয়ে হেঁটেই পার হয়েছেন ইটানগর। রাস্তা দিয়ে আসার সময় যতটা পথ পার হয়েছেন ততক্ষণ সলমনের স্ত্রী রাস্তার কয়েকজনের থেকে কিছু টাকা সাহায্য চেয়েছেন। টানা ১০ ঘণ্টা হেঁটে ক্লান্ত হয়ে যখন তাঁরা থেমেছেন, ততক্ষণে তাঁরা অসমের সীমানায় এসে হাজির হয়েছেন। ক্লান্ত বিদ্ধস্ত সলমন জানান, “আমরা অরুণাচল থেকে আসছি। আমি একজন দিন মজুর। লকডাউনে কাজ চলে যাওয়ার পর আমার কাছে খাওয়ার টাকা নেই। বাড়ি ভাড়া দেওয়ার টাকা নেই। তাই বাড়ির মালিক আমাদের রাস্তায় বের করে দিয়েছেন। সরকারের থেকে আমরা কোনও সাহায্য পাই নি। তাই স্থির করলাম অসমে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাব।”
লকডাউনের জেরে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় হেঁটেই নিজের গ্রামে ফেরেন এই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার। তবে শহরের রাস্তা দিয়ে হাঁটলে পুলিশের রোষানলে পরতে পারেন তাঁরা। তাই জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে তাঁরা হেঁটে এসেছেন অসমে। তবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অরুণাচলে সরকারের তরফ থেকে প্রতিটি অসহায় পরিবারকে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে দিয়ে সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.