সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) মুখ খোলার পরই ঘুরপথে বিতর্কিত এই আইন কার্যকর করার পথে বড়সড় পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (Home Ministry)। এবার জেলাশাসক এবং মুখ্যসচিবদের দেওয়া হল অ-মুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে দেশের মোট ৩১টি জেলার জেলাশাসক এবং ৯টি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এই অধিকার দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ভিনদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে জেলাশাসক এবং মুখ্যসচিবরাই তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৪১৪ জন ভিনদেশি অ-মুসলিম শরণার্থীকে নাগরিকত্ব (Citizenship) দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, এই শরণার্থীদের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন মেনেই নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি, এবং খ্রিস্টান শরণার্থীরা। যে ৯টি রাজ্যের মুখ্যসচিবরা নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার পেয়েছেন, সেগুলি হল গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি এবং মহারাষ্ট্র।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে ঘুরপথে সিএএ কার্যকর করারই পন্থা বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই গুজরাটের দুই জেলার জেলাশাসককে এই ধরনের নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার দেওয়া নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গুজরাটের দুই জেলা মেহসানা ও আনন্দে বসবাসকারী অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ১৯৫৫ সালের আইনে ধর্মের কোনও উল্লেখই ছিল না। কিন্তু কেন্দ্র যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তাতে স্পষ্টত শুধু অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিরোধীরা সরব হয়েছে।
এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন সাফ বলে দিয়েছেন, কোনওভাবেই এরাজ্যে CAA তিনি কার্যকর হতে দেবেন না। আজও কৃষ্ণনগরের সভা থেকে CAA ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “ভোট এলেই ওরা CAA নিয়ে বিভ্রান্ত করে। মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করে। বাংলা ভাগের চেষ্টা করে। গুজরাটের ভোটের আগে বলছে বাংলাতেও CAA করব। CAA মানে তো নাগরিকত্ব, আর মতুয়ারা তো সবকিছুই পাচ্ছেন। সবরকম অধিকারই তো আপনাদের আছে। কেউ আপনাদের নাগরিকত্ব কাড়তে পারবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.