সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: #MeToo। সোশ্যাল মিডিয়ার নয়া ট্রেন্ডে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এবার তাঁর আঁচ গিয়ে পড়ল রাজনীতিতেও। #MeToo ক্যাম্পেনের মাধ্যমে ফাঁস হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যৌন কেলেঙ্কারি। যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠল মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য এম জে আকবরের বিরুদ্ধে। এক নয় একাধিক যৌন হেনস্তার অভিযোগে রীতিমতো ব্যাকফুটে কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী। প্রথম অভিযোগটি করেছিলেন প্রিয়া রামানি নামের এক মহিলা সাংবাদিক। টুইটারে তিনি তাঁর যৌন হেনস্তার কথা তুলে ধরেন। ২০১৭ সালের ভোগ ম্যাগাজিনেও এই অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পর সোমবার আবার সেটা নিয়ে আবারও টুইট করেন প্রিয়া। প্রিয়ার পথে আরও তিনজন মহিলা সাংবাদিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন।
এম জে আকবর বর্তমানে বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ ও বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে সাংবাদিক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন আকবর। দ্য টেলিগ্রাফ, দ্য এশিয়ান এজ, দ্য সানডে গার্ডিয়ানের মতো প্রথম সারির সংবাদপত্রের সম্পাদনাও করেছেন কর্মজীবনে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ চাকরি দেওয়ার অজুহাতে উদীয়মান মহিলা সাংবাদিকদের যৌন হেনস্তা করতেন তিনি। প্রিয়া রামানির অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২৩ বছর বয়সে। মুম্বইয়ের একটি হোটেলে চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য তাঁকে ডাকেন আকবর। সেসময় তিনি প্রিয়ার সঙ্গে জোর করে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে, তাতে সাড়া দেননি প্রিয়া। প্রিয়ার পরই প্রকাশ্যে আসে প্রেরণা সিং বিন্দ্রার অভিযোগ, তিনি বলেন তাঁর জীবনের প্রথম চাকরি ছিল। কাজ নিয়ে আলোচনার জন্য একটি হোটেলে ডাকেন বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। গভীর রাতে সেই আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করে দিলে কর্মক্ষেত্রে তাঁকে অনেক হেনস্তার শিকার হতে হয়। সুজাতা আনন্দন নামের আরও একজন জানান, তাঁর এক বান্ধবী ‘সিঙ্গল মাদার’। একদিন গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে যান আকবর। তাঁকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়, তাতে রাজি না হওয়ায় পরের দিনে কার্মক্ষেত্রে তাঁকেও হেনস্তা করা হয়। এসব দেখে নিজের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন সুমা রাহা নামের এক সাংবাদিক। তাঁর দাবি, ১৯৯৫ সালে কলকাতায় কাজ করতে গিয়ে তাজ বেঙ্গলে একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর। এরপরেই সেই কাজ থেকে সরে আসেন তিনি।
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজধানীতে। বিরোধীরা ইতিমধ্যেই এম জে আকবরের পদত্যাগ দাবি করেছেন। আপাতত নাইজেরিয়ায় আছেন আকবর। তাঁর অনুপস্থিতিতে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এক মহিলা সাংবাদিক জানতে চান, আকবরের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাতে কোনও উত্তর দেননি সুষমা। ওই মহিলা সাংবাদিক এবার বলেন, একজন মহিলা হিসেবে আপনি কী বলবেন, এবারেও কোনও উত্তর না দিয়েই ঘটনাস্থল ছাড়েন বিদেশমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.