Advertisement
Advertisement
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

যোগীরাজ্যে প্রিয়াঙ্কাকে পুলিশি হেনস্তা! রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি কংগ্রেসের

আড়াই কিলোমিটার হেঁটে ধৃত সমাজকর্মীর বাড়িতে যান কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক।

Mera gala dabaya: Priyanka Gandhi accuses UP Police of manhandling
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:December 29, 2019 10:25 am
  • Updated:December 29, 2019 10:33 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘যোগী আদিত‌্যনাথের শাসনে উত্তরপ্রদেশে জোরজুলুম চালাচ্ছে পুলিশ।’ ঠিক এই ভাষাতেই রাজ‌্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। শনিবার যাবতীয় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার তথা সমাজকর্মী এসআর দারাপুরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু, তাঁর সেই যাত্রা সহজ হয়নি। তাঁকে আটকানোর জন্য পুলিশ গলা টিপে ধরে বলেও অভিযোগ। এরপরই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবি তোলে কংগ্রেস। রবিবার এই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি শনিবারই এই ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে পুলিশের কাছে। যেসব পুলিশকর্মী জড়িত ছিল, তাঁদের সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্তের দাবি করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে দারাপুরীর পরিবারের সদস‌্যদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল কংগ্রেস নেত্রীর। কিন্তু, পুলিশ তাঁকে বাধা দেয়। এরপর গাড়ি ছেড়ে এক কর্মীর বাইকে চেপে গন্তব্যের দিকে রওনা হন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু, তাতেও আসে বাধা। শেষ পর্যন্ত, বাধ‌্য হয়ে হাঁটতে শুরু করেন নেত্রী। আর এভাবেই প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে দারাপুরীর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তারপরই সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘এটা কী ধরনের পুলিশি ব্যবস্থা! রাজ্যজুড়ে পুলিশি জোরজুলুম চালাচ্ছে যোগী সরকার। এমনকী সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশি সন্ত্রাসের জেরে রাজ‌্যজুড়ে চূড়ান্ত আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’ এদিন পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্তার করারও অভিযোগ তুলেছেন প্রিয়াঙ্কা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সিএএ’র সমর্থনে রাজ্যপালকে বক্তব্য রাখতে বাধা ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের!]

 

প্রথমে লখনউয়ের একটি স্থানে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় প্রিয়াঙ্কাকে। সেই বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার পর পলিটেকনিক স্কোয়ারের কাছে ফের তাঁর গতি রোধ করে পুলিশ। জানায়, এর থেকে আগে আর এগোনো যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা পালটা জানতে চান, কেন তাঁকে আটকানো হচ্ছে? কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে নেত্রীর রীতিমতো উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়ে যায়। এরপরই গাড়ি থেকে নেমে পড়েন সোনিয়া-তনয়া। সোজা হাঁটা শুরু করেন দারাপুরীর বাড়ির দিকে। প্রিয়াঙ্কার এই কীর্তিতে সকলেই চমকে যান। পলিটেকনিক স্কোয়ার থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে শেষ পর্যন্ত দারাপুরীর বাড়িতে পৌঁছন প্রিয়াঙ্কা। কথা বলেন তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। পরে সাংবাদিকদের কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘মাঝরাস্তাতেই পুলিশ আমায় আটকে দিল। ঈশ্বরই জানেন, কেন ওরা আমাকে আটকাল!’ প্রিয়াঙ্কার অভিযোগ, পুলিশ তাঁর গলা টিপে দেয়। ঘাড়ধাক্কাও দেয়, যার জেরে তিনি মাটিতে পড়ে যান। যদিও বাধাদানের প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বক্তব্য, প্রিয়াঙ্কার যাত্রায় উত্তেজনা বাড়ত। আইনশৃঙ্খলার অবনতিও হতে পারত।

[আরও পড়ুন: ‘সততার মূল্য শুধু বিড়ম্বনা’, বিস্ফোরক নির্বাচন কমিশনার]



এই ঘটনার পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানান সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী সুস্মিতা দেব। বলেন, ‘যেভাবে চলন্ত গাড়িতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটকানো হয়েছে, তাতে প্রাণহানিও হতে পারত। এক মহিলা পুলিশের ধাক্কায় হুমড়ি খেয়ে পড়েও যান নেত্রী। নেত্রী কখন, কোথায় যাবেন, তা আগে থেকে জানানো থাকলেও পুলিশ শনিবার সকালে এসে দাবি করে, সফরসূচি জানানো ছিল না। আসলে উত্তরপ্রদেশে এখন গুণ্ডারাজ চলছে। গণতন্ত্র বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দিচ্ছে না যোগী সরকার। বিক্ষোভকারীদের উপর নির্যাতন করছে পুলিশ। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে কংগ্রেস। সেইসঙ্গে অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৯ ডিসেম্বর সিএএ(CAA) বিরোধী আন্দোলন ঘিরে হিংসা ছড়ায় লখনউতে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন আইজি ও সমাজকর্মী ৭৩ বছরের এসআর দারাপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে যোগীর পুলিশ। তারপর থেকেই জেলবন্দি রয়েছেন তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement