দেবশ্রী সিনহা, নয়াদিল্লি: “চলতি মাসের ১৩ তারিখে কংগ্রেসের ইফতার পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। আর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছেন। কাজেই এই বিষয়ে যা যা জল্পনা চলছে, তা বন্ধ হওয়াই শ্রেয়।”–সোমবার রাতে টুইট করে এ কথা জানালেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। আর তাঁর এই টুইট সামনে আসার পরই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে দিনভর চলা জল্পনা ও রটনায় ছেদ পড়ল।
রাহুল গান্ধীর ডাকা ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির কারণে মমতার পক্ষে কংগ্রেসের ওই ইফতারে যোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দীনেশ ত্রিবেদী ওই ইফতার পার্টিতে যোগ দেবেন। তবে প্রণবকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টি নিয়ে দিনভর জলঘোলা হওয়ায়, শেষ মুহূর্তে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় হাইকমান্ড। সুরজেওয়ালা জানান, এর আগে সোনিয়া গান্ধীর তরফেও প্রণবকে গত ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং প্রণব সেই আমন্ত্রণ রক্ষাও করেন।
[ রাহুলের ইফতার পার্টিতে আমন্ত্রিত নন প্রণব! জল্পনা তুঙ্গে ]
ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠেছে, তবে কি আরএসএস দপ্তরে যাওয়ার কারণেই কি প্রথমে রাহুল প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে ইফতারে আমন্ত্রণ করেননি? আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে রাহুলের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ। রাহুল প্রায় সব সময়ই সংঘকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে থাকেন। সংগঠনের বিরুদ্ধে একাধিক বিরূপ মন্তব্য করার কারণে সংঘ রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সেই আরএসএস দপ্তরে যতই কংগ্রেসের আদর্শের পাঠ শোনান না কেন, রাহুল যে বিষয়টিকে মেনে নিতে পারেননি এ ঘটনা তারই প্রমাণ। সোমবারও যথারীতি আরএসএসকে একহাত নিয়েছেন রাহুল৷ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, দেশ বিজেপি ও আরএসএসের ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছে। তবে বছর খানেকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদি, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বুঝতে পারবেন বিপক্ষ শক্তির ক্ষমতা। রাহুলের এই বক্তব্য যে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত তা বুঝতে কষ্ট হয় না।
[ বিয়ে মানেনি পরিবার, ‘শোলে’র বীরুর কায়দায় আত্মহত্যার হুমকি যুবকের ]
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, বিরোধী শক্তির ক্ষমতা বোঝানোর জন্যই কংগ্রেস এই ইফতার পার্টির আয়োজন করছে। তবে সেই ইফতারের আগেই আমন্ত্রিতদের তালিকা দেখে রাহুলের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমন্ত্রিতদের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কংগ্রেসের দাবি, এই ইফতারে শুধু রাজনৈতিক নেতাদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণববাবুর নাম বাদ গিয়েছিল। এতে কোনও রাজনীতি নেই। তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নাম। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রীর রাজনৈতিক সচিব ও সাংসদ আহমেদ প্যাটেলের টুইট থেকে অনেকেই মনে করছেন প্রণববাবুর সংঘের দপ্তরে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না সোনিয়া গান্ধী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.