সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণধর্ষণ নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। তা সত্ত্বেও নিজেদের লালসা চরিতার্থ করার থেকে পিছপা হচ্ছে না এই সমাজেরই কিছু ‘হীনমন্য’ মানুষ। আর ফের এমনই দুই ব্যক্তির হাতে হেনস্তা হতে হল এক মডেলকে।
এবার ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর। রবিবার সকালে প্রকাশ্য রাস্তায় ঘটে ঘটনাটি। মডেলের অভিযোগ, সেই সময় স্কুটার চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। আচমকাই রাস্তার মাঝে দুই ব্যক্তি তাঁর স্কার্ট ধরে টানাটানি করে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারায় তাঁর স্কুটার। ঘটনায় পায়ে চোট পেয়েছেন মডেল। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ক্ষতর ছবি পোস্ট করে গোটা ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। বলেন, “দুই ব্যক্তি আমার স্কার্ট ধরে টানাটানি করার চেষ্টা করছিল। আর বলছিল (হিন্দিতে), ‘দেখাও স্কার্টের নিচে কী আছে।’ আমি তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করছিলাম। তখনই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। আর সেখানেই চোট পাই। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হল, প্রকাশ্য রাস্তাতেই এমন অভব্যতা করছিল ওই দুই ব্যক্তি। কিন্তু কেউ ঘটনার প্রতিবাদ করল না। আমি দুর্ঘটনার কবলে পড়তেই ওরা পালিয়ে যায়। ওদের গাড়ির নম্বরও দেখতে পাইনি। আমি এমন ঘটনা চুপচাপ দেখার মেয়ে নই। কিন্তু সেই সময় ওরা পালিয়ে গেল আর আমি কিছুই করতে পারলাম না। নিজেকে অত্যন্ত অসহায় মনে হচ্ছিল।”
ঘটনার পর যে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, সে কথাও জানিয়েছেন মডেল। লিখেছেন, “আমার বন্ধুরা আমায় কাফেতে নিয়ে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওই তিরিশ মিনিট কিছুতেই মাথা থেকে মুছে ফেলতে পারছি না। আমি দুর্বল নই। কিন্তু চূড়ান্ত হতাশ।” এমন ঘটনা ব্যস্ত রাস্তায় না ঘটে নিরিবিলি এলাকায় ঘটলে কী হত? স্কুটারে না থেকে যদি হেঁটে যেতেন তাহলে কী হত? এসব আশঙ্কার কথা ভেবেই বারবার শিউরে উঠছেন মডেল। নিজেকে সামলে নিয়ে ঘটনার পর দ্বিতীয়বার ওই এলাকায় গিয়ে রাস্তায় সিসিটিভি ফুটেজের খোঁজ করেন তিনি। কিন্তু সেই রাস্তায় কোনও সিসিটিভিই নেই বলে জানিয়েছেন মডেল। এদিনই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন তিনি।
মহিলারা কী পোশাক পরবে তা সম্পূর্ণ তাঁদের পছন্দ। এর জন্য কেন তাঁদের প্রকাশ্যে এভাবে শ্লীলতাহানির শিকার হতে হবে? ঘটনার পর এমন প্রশ্নই তুলেছেন যুবতী। কারণ এমন ঘটনার পরও তাঁর পোশাক নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। দুর্ঘটনায় আক্রান্ত মডেলকে সাহায্য করতে আসা আরেক ব্যক্তি বলেন, মডেল স্কার্ট পরেছিলেন বলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। আর তাতেই আরও ভেঙে পড়েন তিনি। কোন দিকে এগোচ্ছে সমাজ? যেখানে আটমাসের শিশুকেও রেয়াত করে না যৌনপিপাষুরা, সেখানে কীভাবে সাধারণ মানুষ স্কার্টের দোহাই দিয়ে নির্যাতিতাকেই ভর্ৎসনা করে অভিযুক্তের পাশে দাঁড়ায়? আর শুধুই তো বাড়ির বাইরে নয়, যে কোনও জায়গাতেই ঘটছে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের মতো ঘটনা। তবে পোশাকের প্রশ্ন আসে কী করে? তবে কোথায় নিরাপদ মহিলারা? ঘুরেফিরে বারবার সে প্রশ্নই উঠছে। কিন্তু উত্তর অজানা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.