নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই মুহূর্তে দেশে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কাছে ব্যাংকগুলির বকেয়া অঙ্কের পরিমাণ প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা। আর তালিকার শীর্ষে রয়েছে মেহুল চোকসির সংস্থার নাম। ঋণশোধের ক্ষমতা থাকলেও যারা ঋণ শোধ করেন না তারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। এদের তালিকা প্রকাশ পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভগবত করদ। এই তালিকায় বিজয় মালিয়া, নীরব মোদিরা নেই। কারণ এদের ব্যবসা আগেই লাটে উঠেছে।
আরবিআই-এর তত্ত্ব অনুযায়ী, যে সমস্ত ব্যক্তির সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও তাঁর ঋণের অর্থ ফেরত দেন না ব্যাংককে, তাঁদেরই ‘উইলফুল ডিফল্টার’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। দেশের যে ২৫ উইলফুল ডিফল্টার সংস্থার নাম প্রকাশ করা হয়েছে তার মধ্যে সবার উপরে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির সংস্থা গীতাঞ্জলি জেমস। তাদের বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৭১১০ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এরা ইনফ্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। তাদের বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৫৮৭৯ কোটি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে কনকাস্ট স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড। তাদের ঋণের পরিমাণ ৪১০৭ কোটি। এছাড়াও তালিকায় থাকা ওজনদার নামের মধ্যে রয়েছে আরইআই অ্যাগ্রো এবং এবিজি শিপইয়ার্ড। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, মার্চের শেষ দিন পর্যন্ত এই সমস্ত ব্যক্তি ও সংস্থার ঋণের এই হিসাব অঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যদিও টাকার অঙ্কের হিসাবে ঋণখেলাপিদের বকেয়া বিপুল পরিমাণ, তবে আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরের মার্চের শেষে ‘উইলফুল ডিফল্টার’-এর সংখ্যা কমেছে। আগের বছর এই অঙ্কটি ছিল ২৮৪০, যা মার্চের শেষে নেমে এসেছে ২৭৯০-এ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে দেশ ছাড়েন চোকসি। তার কয়েকদিনের মধ্যেই এই হীরে ব্যবসায়ীর নামে আর্থিক তছরুপ ও প্রতারণার অভিযোগ সামনে আসে। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের জাল ‘লেটার অফ আন্ডারটকিং’ দেখিয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে মেহুল ও তাঁর ভাগ্নে নীরব মোদীর বিরুদ্ধে। পরে জানা যায়, অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়ে সেই দ্বীপেই আস্তানা গেড়েছেন মেহুল চোকসি। সেদিন থেকে এখনও পর্যন্ত চোকসি আর ভারতে পা রাখেননি। কিন্তু গতবছর অ্যান্টিগা থেকে কিউবা যাওয়ার পথে তাঁকে ডোমিনিকায় আটক করা হয়। জেলবন্দি অবস্থায় তাঁর ছবি প্রকাশ্যে আসে। এরপরই চোকসিকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। এখনও পর্যন্ত তা সম্ভব না হলেও পলাতক ব্যবসায়ীকে দেশে ফেরাতে মরিয়া কেন্দ্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.