সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাপের মুখে যখন পিছু হটেছে কেন্দ্র, তখন শিক্ষাক্ষেত্রে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার প্রশ্নে বিতর্ক আরও বাড়ালেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। এই ইস্যুতে নিজের রাজ্যকেই নিশানা করেছেন তিনি। তথাগত রায়ের বক্তব্য, ‘বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ কিংবা নেতাজির সঙ্গে হিন্দি শেখার কোনও বিরোধ নেই। বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরল-সর্বত্র ঘর ঝাঁট দেয়। বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল।’ অর্থাৎ মেঘালয়ের রাজ্যপালের যুক্তি, বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করতে পারলে, হিন্দি শিখতে আপত্তি কেন?
কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির খসড়া পেশ করেছেন ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি কমিটির চেয়ারম্যান ও ইসরোর প্রাক্তন প্রধান ডঃ কৃষ্ণস্বামী কস্তুরীরঙ্গন। খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৬৮ সাল থেকেই বহু স্কুলে ‘থ্রি ল্যাঙ্গুয়েজ ফরমুলা’ চলে আসছে। তা চালিয়ে যাওয়া উচিত। ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি কমিটির প্রস্তাব, অ-হিন্দিভাষী রাজ্যে স্থানীয় ভাষা ও ইংরেজির সঙ্গে হিন্দিও শিখতে হবে পড়ুয়াদের। আর হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দি ও ইংরেজির সঙ্গে অন্য একটি ভারতীয় ভাষাও পড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির খসড়া প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি তো বটেই, এভাবে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে এ রাজ্যের সরকারও। শেষপর্যন্ত চাপের মুখে সুর নরম করেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। শিক্ষানীতির খসড়া থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখন ফের বেফাঁস মন্তব্য করলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়।
কী বলেছেন মেঘালয়ের বাঙালি রাজ্যপাল? স্কুলে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গিয়ে একাধিক যুক্তি দিয়েছেন তিনি। তথাগত রায়ের বক্তব্য, ‘‘তামিলনাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোকই মোটামুটি হিন্দি বোঝেন। অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী ছাড়া ইংরেজি কেউ বুঝবেন না। যাঁরা ঠিক করেছে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও ফেলবেন না, তাঁরা ছাড়া বাকিদের বাস্তবটা মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে। না হলে পস্তাতে হবে।’’ এমনকী, বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করতে পারলে, হিন্দি শিখতে আপত্তি কোথায়? ঘুরিয়ে সে প্রশ্নও তুলেছেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়।
তামিল নাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোক মোটামুটি হিন্দি বোঝে | অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ছাড়া ইংরিজি কেউ বুঝবে না | যাঁরা ঠিক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও বেরুবেন না, তাঁরা ছাড়া বাকিদের বর্তমানকে, বাস্তবকে মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে | না হলে পস্তাতে হবে | |
— Tathagata Roy (@tathagata2) 4 June 2019
সঙ্গে হিন্দি শেখার কি বিরোধ তা আমার বোধগম্য হল না | দ্বিতীয়ত, হায়, এঁদের কে বোঝাবে এই মনীষীদের কাল বহুদিন গত, তারপর বাংলার বৃহদংশও গত, এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত সব জায়গায় ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বাইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল |
— Tathagata Roy (@tathagata2) 4 June 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.