মণিশঙ্কর চৌধুরি: সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল মেঘালয়ে। বহিরাগত কাউকে রাজ্যে আশ্রয় দেওয়া যাবে না এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন সেখানকার বিভিন্ন জনজাতির মানুষরা। পরে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু, সমস্যা যে পুরোপুরি মেটেনি তার প্রমাণ পাওয়া গেল। বাস্কেটবল (basketball) খেলতে গিয়ে খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের হাতে আক্রান্ত হতে হল পাঁচজন বাঙালি যুবককে। বিতর্ক শুরু হতেই টুইট করে এই ঘটনাটির কড়া নিন্দা করেছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) পাশ হওয়ার পর থেকেই উত্তর-পূ্র্বের রাজ্যগুলিতে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। বহিরাগতদের রাজ্যে ঠাঁই দেওয়া হবে না বলে দাবি জানাতে থাকেন অসম, মেঘালয় ও মণিপুর-সহ অন্য রাজ্যগুলি ভূমিপুত্ররা। পরিস্থিতি এই রকম জায়গায় যায় যে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলেও মেঘালয়ে বসবাসকারী বিভিন্ন জনজাতির মানুষরা বহিরাগতদের রাজ্যে থাকতে না দেওয়ার বিষয়ে এককাট্টা হয়ে উঠেছিল।
এর মাঝেই গত দু’সপ্তাহ ধরে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের লাওসোতুন (Lawsohtun) ব্লক ফোর এলাকায় বাস্কেটবল খেলতে আসছিলেন পাঁচ জন বাঙালি যুবক। শুক্রবার আচমকা বাস্কেটবল কোর্টের মধ্যে ঢুকে তাঁদের উপর লোহার রড ও লাঠি নিয়ে চড়াও হয় স্থানীয় খাসিয়া সম্প্রদায়ের ২০ জন মানুষ। বাঙালি যুবকদের বেধড়ক মারধর করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে অন্য বাসিন্দারা ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধারের পর স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভরতি করেন। এই খবর পাওয়ার পরেই নিজের ফেসুবক অ্যাকাউন্ট থেকে বিষয়টি পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে ট্যাগ করেন মেঘালয়ের এক বিখ্যাত সাংবাদিক। তারপরই তীব্র নিন্দা করে টুইট করেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী। দোষীদের গ্রেপ্তার করে কড়া শাস্তি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, শিলংয়ের লাচুমেয়ার এলাকার বাসিন্দা বিশাল ঘোষ (২৪), লাবানের বাসিন্দা অরিন্দম দাস (২২), লাস্ট স্টপের বাসিন্দা শুভর্ষি দাস পুরকায়স্থ (২২) ও সপ্তর্ষি দাস (২০) এবং বরাপাহাড়ের বাসিন্দা পিনাক দেব লাওসোতুন এলাকার একটি বাস্কেটবল কোর্টে খেলতে আসতেন। শুক্রবার তাঁদের মারধর করেছে ২০ জন। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.