সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রামলালা হাম আয়ে হে, মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে’ অযোধ্যার অলিতে-গলিতে আবারও সেই ৯২-এর কোলাহল। একদিকে, ‘মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে’-র সঙ্গে সঙ্গে ‘মন্দির জলদি বানায়েঙ্গে’ সুরে আকাশ বাতাশ মুখরিত করছে ভিএইচপি-র করসেবকরা। অন্যদিকে, শিব সেনা সমর্থকদের বুলি, ‘হর হিন্দু কা ইয়েহি পুকার, পহেলে মন্দির ফির সরকার।’ মন্দিরের দাবিতে দুটি ঘোরতর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের এই অযোধ্যা অভিযান নিয়ে গোটা জেলায় চাপা উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভিএইচপি-র দাবি ইতিমধ্যেই তাদের প্রায় দু’লক্ষ সমর্থক অযোধ্যায় হাজির হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই শিবের আদলে পোশাক পরেছেন। রবিবার সকাল হতেই সকলে একসঙ্গে বিতর্কিত স্থানের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। সেখানে বসছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্মসভা। দু’লক্ষ করসেবক ছাড়াও সাধু, সন্ত ধর্মগুরুরাও উপস্থিত থাকবেন বিতর্কিত স্থানে। আরএসএস জানিয়েছে ১৩০০-র বেশি বাস ও ১৫০০-র বেশি চার চাকার গাড়িতে তাদের সমর্থকরা শহরে আসছেন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩ লক্ষ খাবারের প্যাকেট।
এদিকে, ভিএইচপির একদিন আগেই পৃথক কর্মসূচি রয়েছে শিব সেনার। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র থেকে ট্রেনে করে হাজার হাজার শিব সেনা কর্মী পৌঁছেছেন অযোধ্যা। আজ চার্টার্ড বিমানে অযোধ্যা পৌঁছাবেন শিব সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে, থাকছেন তাঁর দুই ছেলেও। উদ্ধবও রামলালার জন্মস্থানে আরতি করবেন, সরযূ নদিতে পুজো দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে শিব সেনা সুপ্রিমোর। একদিন আগে থেকেই অযোধ্যা কার্যত দখল করে নিয়েছেন শিব সেনা কর্মীরা। দুই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের অভিযান ঘিরে বেশ উদ্বিগ্ন বুদ্ধিজীবীমহলের একাংশ। অনেকেই মনে করছেন এত বেশি সংখ্যক করসেবক একসঙ্গে রামলালার জন্মস্থানে হাজির হলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না আয়োজকদের উদ্দেশ্যে। যদিও শিব সেনা এবং ভিএইচপির দাবি, তাদের সমর্থকরা অনৈতিক কিছু করবেন না, সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করার দায় তাদের। ইতিমধ্যে যোগী সরকারের তরফে অযোধ্যায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেকেই ভয়ে শহর ছেড়েছেন বলে সূত্রের খবর। যদিও ভিএইচপির দাবি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শহর ছাড়ার খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো। রামমন্দির তৈরিরে বাধা সৃষ্টি করতেই রটানো হচ্ছে মিথ্যে খবর। শুক্রবারের প্রশাসনের তরফে শহরের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফ ২০ কোম্পানি পিএসি ( উত্তরপ্রদেশ পুলিশ) মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে আধাসামরিক বাহিনী। রয়েছে র্যাফও। শহরকে নিরাপত্তার স্বার্থে আটটি জোনের পাশাপাশি ষোলোটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে টানাপোড়েনের মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনীতির জলঘোলাও। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব অযোধ্যায় সেনা নামানোর আবেদন জানিয়েছেন। মায়াবতীর অভিযোগ, আসল ইস্যু থেকে মানুষের চোখ সরাতে মন্দির ইস্যু জাগানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশেরই মন্ত্রী ও পি রাজভর বলছেন, “এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর উচিত রাজ্যের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, তা না করে মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে যাওয়া ঠিক নয় যোগীর।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.