সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকে আদর করে তাঁকে বলেন জঙ্গলের ঠাকুমা। বয়স পঁচাত্তর পেরিয়েছে। ঠাকুমা তো তিনি বটেই, তবে জঙ্গলের কেন? কারণ জঙ্গলই তাঁর কাছে সন্তান-সন্ততির মতো। জঙ্গলকে চেনেন হাতের তালুর মতোই। চেনেন লাতা-পাতা। গাছগাছালির বিস্ময় গুণ তাঁর নখদর্পণে। আর তা ব্যবহার করেই আবিষ্কার করেছেন এমন ওষুধ যা সাপে কাটা রোগীকেও ভাল করে তুলতে পারে। এবার দেশ তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করল।
[ রিয়েল থেকে রিলে পদ্মশ্রী করিমুল, এবার সিনেমায় ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ ]
কেরলের বাসিন্দা লক্ষ্মীকুট্টি। তিরুবনন্তপুরম জেলার কল্লর অঞ্চলে তাঁর বাস। চারিদিকে ঘন জঙ্গল। কিন্তু জঙ্গল ছেড়ে তিনি চলে আসেননি। বরং জঙ্গলকে কী করে মানবসভ্যতার কাজে লাগানো যায়, তাই হাতেকলমে করে দেখিয়েছেন। কোথা থেকে এল এই ভাবনা? পঁচাত্তরের বৃদ্ধা জানাচ্ছেন, আজও তাঁর গ্রামে কোনও রাস্তা নেই। সেই ১৯৫২ সালে অনুমোদন মিলেছিল। কিন্তু বাস্তবে আর সে রাস্তা হয়নি। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারায় নিজের সন্তানকে হারিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিনই পণ করেছিলেন, আর কারও কোল যেন খালি না হয়। গাছ-গাছালি যে বহু রোগ ভাল করতে পারে, তা জানতেন। সন্তান হারানোর পর তা নিয়েই চর্চা করতে শুরু করেন। সে চর্চাই মানবসভ্যতার কাছে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। গাছ-গাছড়া ব্যবহার করে নিজের জ্ঞান আর স্মৃতি থেকে প্রায় ৫০০ রকমের ওষুধ তৈরি করেছেন তিনি। যার মধ্যে আছে সাপের বিষ নামানোর ওষুধও। অর্থাৎ সাপে কাটা রোগীকেও তিনি সারিয়ে তুলতে পারেন লতা-পাতার গুণে।
There is no road to my home even today,it was approved in 1952.People are not able to bring patients in time, providing medicine at the earliest is important in poison treatment, My son lost his life as we could not take him to hospital on time as there was no road: Lakshmikutty pic.twitter.com/jcvNFhSols
— ANI (@ANI) January 28, 2018
কোথা থেকে আয়ত্ত করলেন এই বিদ্যা? পদ্মশ্রী লক্ষ্মীকুট্টি জানাচ্ছেন, এসবই তাঁর মায়ের থেকে শেখা। ছাপোষা গৃহবধূ ছিলেন তিনি। কিন্তু জানতেন গাছের গুণ। মায়ের থেকেই যা শিখেছিলেন, আজ তাইই সকলের কাজে লাগছে। দূর দূরান্ত থেকে সাপে কাটা রোগী নিয়ে মানুষ তাঁর কাছে যান। আর তিনি আশ্চর্য ক্ষমতাবলে সারিয়ে তোলেন। তিনি নিজেই জানাচ্ছেন, সবরকম সাপের বিষ থেকে মুক্তির ওষুধই তাঁর জানা আছে। বিগত প্রায় পাঁচ দশক ধরে এভাবেই নিরুচ্চারে মানুষের সেবা করে চলেছেন। এবছর দেশ তাই তাঁকে পদ্মশ্রীতে সম্মানিত করল। নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বহু কথা হয়। বহু বিতর্ক আলোচনা চলে। লক্ষ্মীকুট্টি যেন দেখিয়ে দিলেন ক্ষমতায়ন শব্দটির সংজ্ঞা এবং স্বরূপ ঠিক কীরকম হতে পারে।
Kerala:Padmashree awardee Lakshmikutty is a 75-yr-old tribal woman from Kallar forest area in Thiruvananthapuram district.She has been practicing traditional medicine for the past 50 yrs&is known as ‘poison healer’. She also received Kerala govt’s Naattu Vaidya Ratna award in ’95 pic.twitter.com/E0l5ZNGpCh
— ANI (@ANI) January 28, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.