সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের একটি যুগান্তকারী রায় কেরল হাই কোর্টের। দিন কয়েক আগেই ধর্ষণের সংজ্ঞা বদলের নির্দেশ দিয়ে নজর কেড়েছিল কেরল হাই কোর্ট (Kerala High Court)। এবার বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্ষণের ভূমিকা নিয়ে মতামত জানাল আদালত। জানান হল, বিবাহিত জীবনে জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, যা কি না ধর্ষণের নামান্তর, তা বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে গণ্য করা যাবে।
প্রায় এক দশক ধরে চলা একটি মামলায় দুই পক্ষের বিবাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে এদিন কেরল হাই কোর্ট জানায়, ভারতীয় আইন হয়তো বৈবাহিক ধর্ষণকে আলাদাভাবে গণ্য করে না কিন্তু আদালত তা করে। এবং বৈবাহিক জীবনে ধর্ষণের মতো ঘটনা বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে গণ্য হতে পারে। বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক ও বিচারপতি কউসর ইড়াপ্পাগথকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ জানায়, অনেক সময় বৈবাহিক জীবনে ধর্ষণের ঘটনা তখনই ঘটে থাকে যখন স্বামী মনে করেন স্ত্রীর শরীর তাঁর সম্পত্তি এবং তার উপর তাঁর অধিকার রয়েছে। এবং সেই যুক্তিতে স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন তিনি, কিন্তু তা ধর্ষণ ছাড়া কিছুই নয়। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আদালত জানিয়েছে, ‘আইন বৈবাহিক ধর্ষণের জন্য কোনও আলাদা শাস্তি ধার্য করেনি বটে কিন্তু বিষয়টি থেকে আমরা মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি না। এবং বিবাহবিচ্ছেদ পাওয়ার জন্য এটি অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে বিবেচিত হওয়া উচিত।’
বছর দশেকের পুরনো এক মামলায় কেরলের একটি পারিবারিক আদালত স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তার পালটা হাই কোর্টে আবেদন করেন স্বামী। সেই আর্জি খারিজ করে আদালত জানায়, ‘সম্পদ ও যৌনতার জন্য স্বামীর অদম্য ক্ষুধাই ওই মহিলাকে অবসাদের দিকে ঠেলে দিয়েছিল যার জন্য তিনি বিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকী তিনি কোনও আর্থিক সাহায্য বা ক্ষতিপূরণের জন্যও আবেদন করেননি। আইনের মন্দিরে তাঁর আর্জি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মাথা খুঁড়েছে। প্রাপ্য সুবিচার পাওয়া তাঁর অধিকার।’ উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে ওই দম্পতির বিয়ে হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতায় চিকিৎসক হলেও তাঁর স্বামী কোনওদিন কোনও পেশায় আগ্রহী ছিলেন না বলে অভিযোগে জানিয়েছিলেন ওই মহিলা। এছাড়া বিপুল সোনার গয়না, ফ্ল্যাট ও গাড়ি সহ বহু পণ-ও গ্রহণ করেছিলেন বিয়ের সময়। এই সমস্ত বিষয় নজরে রেখে কেরল হাই কোর্ট ফ্যামিলি কোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে বিচ্ছেদের নির্দেশই জারি করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.