সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের উপর বিমুদ্রাকরণের ছাপ এখন স্পষ্ট এবং ক্ষত এখন দগদগে। এই ভাষাতেই ফের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তোপ দাগলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিং (Manmohan Singh)।
করোনা পরবর্তী সময়েও দেশে কর্মসংস্থানের বেহাল অবস্থার জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকারের (Modi government) নোটবন্দিকেই দায়ী করে মনমোহন সিংয়ের বক্তব্য, চিন্তাভাবনা না করে নোটবন্দি করার জন্যেই দেশে বেকারত্বের হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কেরলের একটি সম্মেলনে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে এই মন্তব্য করেন মনমোহন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে দেশের অঙ্গরাজ্যগুলির সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই রাতারাতি নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে অর্থনীতিবিদ মনমোহনের অভিযোগ, এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী, ক্ষতিকারক।
দিন কয়েক আগেই মোট পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষণা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কেরলও। এখানে এক দফায় ভোট হবে ৬ এপ্রিল। ভোটের আগে রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ আয়োজন করেছিল ‘প্রতীক্ষা ২০৩০’ নামে একটি সম্মেলনের। সেখানেই ভার্চুয়ালে যোগ দিয়ে দেশের বেকারত্বের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মনমোহন। প্রবীণ অর্থনীতিবিদ বলেন, “দেশে বেকারত্বের হার ভয়াবহ। অসংগঠিত ক্ষেত্র ভেঙে পড়েছে। এর জন্য দায়ী ২০১৬ সালের অপরিকল্পিত বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত।”
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ সালে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৪৫ বছরে সর্বনিম্ন। তার পরেও গোটা দেশে সেই পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। তার পরেই অতিমারীর হানাদারিতে কর্মসংস্থানের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বরং বাড়তি কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। কার্যত মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রের। এই প্রসঙ্গগুলি ঘিরেই কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মনমোহন। কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি বলেন, “ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দর্শনের অন্যতম ভিত্তি হল যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এবং রাজ্যগুলির সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা-পর্যালোচনা। সংবিধানে তেমনটাই বলা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় কোনও আলোচনাই করে না।”
২০১৬ সালে বিমুদ্রাকরণের পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য বিধানসভা ভোটের আগে সেই ক্ষতই ফের উসকে দিতে চাইছে বিরোধীরা। কেরলে বিধানসভা ভোটে মূলত দুই শক্তির মধ্যে লড়াই হয়— ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা ইউডিএফ এবং লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এলডিএফ। ইউডিএফ জোটে মূল শক্তি কংগ্রেস। আসন্ন নির্বাচনে ইউডিএফ ভাল ফল প্রকাশ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.