সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পার্টনারশিপের ব্যবসায় ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ শোধ করতে না পেরে বন্ধুকে প্রথমে খুন। পরে দেহ ২৫ টুকরো করে কেটে একাধিক জায়গায় ফেলার অভিযোগ। এই অভিযোগে বছর ছিয়াত্তরের এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম হারনেক সিং ধিলোন। বন্ধুকে হত্যা ও টুকরো করার কাজে বৃদ্ধকে সহযোগিতার জন্য ছিল স্ত্রী গুরমেহর কৌর। পরে খুনের প্রমাণ লোপাটের জন্য স্ত্রীকে গলা কেটে খুন করে হারনেক সিং। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। ধৃত হরিয়ানার ডিএলএফ-২ এর জে ব্লকের বাসিন্দা। খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পুলিশকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করে হারনেক সিং ধিলোঁ। সেজন্য শরীরে আঘাত করে বাড়িতে ডাকাত পড়ার নাটকও করে সে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। হারনেক সিংকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ১৪ অক্টোবর প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। এতদিনে সেই হত্যারহস্যের জট ছাড়াতে পুলিশ সক্ষম হল। প্রথমে অস্বীকার করলেও লাগাতার পুলিশি জেরায় অপরাধ কবুল করে হারনেক সিং ধিলোঁ। যশকরণ সিং (৫১) নামের এক বন্ধুর থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে যৌথ ব্যবসা শুরু করেছিল ওই বৃদ্ধ। কিন্তু বারবার চেয়েও সেই টাকা ফেরত পাননি যশকরণ। বিরক্ত হয়ে ব্যবসা থেকে নিজের অংশ তুলেও নেন। ঋণের টাকা আদায় করতে গত ১৪ অক্টোবর হারনেক সিংয়ের বাড়িতে যান। সেখানে অন্য এক পারিবারিক বন্ধুর সাহায্যে ধিলোঁ দম্পতি যশকরণের হাত-পা বেঁধে প্রথমে হত্যা করে। পরে তাঁর দেহ ২৫ টুকরো করে দু’টি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে পৃথক দু’জায়গায় ফেলে দেয়। এরপরেই গা ঢাকা দিতে ধিলোঁ দম্পতি লুধিয়ানার পৈতৃক বাড়ি চলে যায়। যদিও পালিয়ে বাঁচতে পারবে না বুঝেই ফের ফিরে আসে ডিএলএফ ২-র বাড়িতে। এরপর এক সঙ্গে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে ধিলোন দম্পতি। শেষ মুহূর্তে স্ত্রী আত্মহত্যা করতে না চাইলে নিজের হাতে স্ত্রীর গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। যদিও নিজে আত্মহত্যা করেনি। বরং পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে দেহে সামান্য আঘাতের চিহ্ন তৈরি করে। সেই আঘাতের কারণকে বিশ্বাসযোগ্য করতে বাড়িতে ডাকাত পড়ার গল্পও ফাঁদে সে।
অন্যদিকে যশকরণের স্ত্রী মনজিৎ কৌর কিন্তু প্রথম থেকেই ধিলোন দম্পতির দিকে অভিয়োগের আঙুল তুলেছিলেন। তাঁর স্বামী নিখোঁজ হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ধিলোন দম্পতি। অনিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলে হারনেক সিংকে ডেকে পাঠানো হয়। থানায় যশকরণ নিখেোঁজ সংক্রান্ত জেরা মুখে হারনেক সিং ভেঙে পড়ে। পুলিশকে জানায়, এই ঘটনায় ঘরে-বাইরে অপ্রস্তুত হতে হচ্ছিল তাদের। এই অপমানের হাত থেকে মুক্তি পেতেই তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। বারবার বয়ান বদলে পুলিশের সন্দেহ আরও তীব্র হয়। শেষে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অপরাধ কবুল করে বৃদ্ধ হারনেক সিং। আদালতে তোলা হলে তাকে দু’দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছেন বিচারক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.