সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। উদ্বিগ্ন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে রীতিমতো কড়া বার্তাও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ঘটনা হল, প্রধানমন্ত্রী যেদিন কড়া বার্তা দিলেন, সেদিনই ফের গো-মাংস বহনের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করল গো-রক্ষকরা। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের রামগড়ে। ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু।
[সীমান্তে মুখোমুখি ভারত ও চিনের প্রায় তিন হাজার সেনা]
জানা গিয়েছে, নিহত মহম্মদ আলিমুদ্দিন ঝাড়খণ্ডেরই হাজারিবাগ জেলার মনুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ছিলেন মাংস বিক্রেতা। বৃহস্পতিবার সকালে একটি গাড়ি করে যাওয়ার সময় রামগড়ের বাজরাতার গ্রামে, তাঁর পথ আটকান কয়েকজন গ্রামবাসী। অভিযোগ, আলিমুদ্দিনকে গাড়ি থেকে টেনে বের করে বেধড়ক মারধর করা হয়। গাড়িটিও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। রামগড় জেলার ডিএসপি রাজেশ্বরী বি জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় আলিমুদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। এদিকে টুইটারে রামগড়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডু। তিনি লিখেছেন, এটা একটি বর্বরোচিত ঘটনা। সকলেরই এই ঘটনার নিন্দা করা উচিত। কিন্তু, এই ঘটনার সঙ্গে ধর্মকে মিশিয়ে ফেলবেন না।
Its barbaric incident, should be condemned by all, don’t bring religious angle in it:Venkaiah Naidu on Jharkhand(Ramgarh) beef lynching case pic.twitter.com/n8d0xMpBxm
— ANI (@ANI_news) 30 June 2017
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গো-রক্ষার নামে বা গো-মাংস বহন করার অভিযোগে মানুষ খুনের অভিযোগ উঠছে। দিন কয়েক আগেই হরিয়ানায় চলন্ত ট্রেনে জুনেইদ খান নামে এক কিশোরকে কুপিয়ে খুন করে একদল দুষ্কৃতী। মৃতের পরিবার দাবি, গো-মাংস বহন করার অভিযোগেই হামলার শিকার হতে হয় ওই কিশোরকে। এই ঘটনার পর দেশ জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। ১১টি শহরে আলাদাভাবে সমবেত হয়ে গণপিটুনির প্রতিবাদ জানায় মানুষ। বস্তুত, বুধবার ঝাড়খণ্ডেরই একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তাণ্ডব চালায় গো-রক্ষকরা। বাড়িতে মরা গরু পাওয়া গিয়েছে। এই অভিযোগ তুলে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী, আক্রান্ত যুবককে বাঁচাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। যদিও সময়মতো পুলিশ এসে যাওয়ায় কোনওমতে প্রাণে বেঁচে যান উসমান আনসারি নামে ওই যুবক। এরপরই বৃহস্পতিবার গুজরাটে সরবমতী আশ্রমের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে কড়া বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাফ জানিয়ে দেন, গো-ভক্তির নামে মানুষকে খুন করাকে কখনই বরদাস্ত করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও মানুষেরই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার নেই। হিংসা কখনই সমাধানের পথ হতে পারে না। দেশকে অহিংসার ভূমি বলে উল্লেখ করে গণপিটুনির তীব্র নিন্দাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.