সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রান্না করেছেন দলিত মহিলা, তাই অন্ন স্পর্শ করব না!’ কোয়ারেন্টাইনে থেকেই আজব আবদার যুবকের। যুবকের মন্তব্যে অপমানিত বোধ করায় এফআইআর দায়ের করেন ওই মহিলা। যার জেরে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ওই যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে যোগী আদিত্যনাথ শাসিত উত্তরপ্রদেশে। ২০২০ সালে দাঁড়িয়ে এমন দুঃসময়ের মাঝে উত্তরপ্রদেশে এমন ছুঁৎমার্গের বহর দেখে অনেকেই হতবাক! বলছেন, “এই মারণ ভাইরাসও জাত-পাত, শ্রেণিবিভেদ ঘোচাতে পারল না।”
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। গত ২৯ মার্চ উত্তরপ্রদেশের খুরদার ভুজৌলির বাসিন্দা সেরাজ আহমেদ দিল্লি থেকে ফিরেছেন। অন্য রাজ্য থেকে গ্রামে ফেরায় নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নিয়ম মেনেই গ্রাম সংলগ্ন একটি প্রাথমিক স্কুলে গড়ে ওঠা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছেন তিনি। সেখানেই আহমেদ ছাড়াও কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন আরও চারজন। নিয়ম অনুযায়ী সেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই তাঁদের খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্তও করা হয়েছে। রান্নার লোক এসে রান্না করে দিয়ে যাচ্ছেন সেন্টারে। কিন্তু গত রবিবার রান্নার লোক না আসায় বিপাকে পড়েন সংশ্লিষ্ট গ্রামের প্রধান লীলাবতী দেবী। অগত্যা খুন্তি হাতে তাঁকেই যেতে হয় সেন্টারের হেঁশেলে, যাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৫জনকে অভুক্ত না থাকতে হয়। তাতেই বাঁধে গণ্ডগোল। রান্না করা খাবার দিতে গিয়ে চরম অপমানিত হন লীলাবতী দেবী। কারণ, তিনি দলিত বলে তাঁর হাতে খাবার খেতে অস্বীকার করেন সেরাজ।
অপমানের পরই গ্রামপ্রধান সেরাজ পুলিশের দ্বারস্থ হন। সাব ডিভিশনাল ডিসট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট দেশদীপক সিং এবং ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার রামকান্তকে পুরো বিষয়টি জানান। লীলাবতী পুলিশকে জানিয়েছেন, দলিত সম্প্রদায়ের হওয়ায় তাঁর হাতের রান্না খেতে অস্বীকার করেছেন কোয়ারেন্টাইনে থাকা যুবক। এরপর রবিবারই লীলাবতী দেবী পুলিশের কাছে আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। খাদ্দা থানার এক পুলিশ আধিকারিক এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু আইনে আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।
গোটা ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকার বিজেপি বিধায়ক বিজয় দুবে লীলাবতী দেবীর বাড়িতে যান। তাঁকে খাবার পরিবেশনের জন্য অনুরোধ করেন। তিনি লীলাদেবীকে বলেন, “অস্পৃশ্যতা সমাজের কলুষতা। তাই কোনওভাবেই এসব বরদাস্ত করা হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.