সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যুতে ‘মোক্ষ’ প্রাপ্তি! উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বরেলির বাসিন্দা হেতরাম পাল একসঙ্গে দু’টি যুদ্ধ চালাচ্ছিলেন। তিন বছর আগে ২০১৮ সালে অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু প্রভিডেন্ট ফান্ডের (Provident Fund) টাকা মেলেনি। প্রাপ্য পেতে গত ১০ মাস ধরে কঠিন লড়াই চালাচ্ছিলেন তিনি। প্রতিবাদ-ধরনাতেও ফল হয়নি। অন্যদিকে অসুস্থ হেতরামের শরীর ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছিল। চিকিৎসার খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল পরিবার। সোমবার জীবনযুদ্ধে হার মানলেও অন্য যুদ্ধে জয়ী হলেন হেতরাম। তাঁর মৃত্যুর ৩ ঘণ্টা পরেই আধিকারিকরা পিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩ লক্ষ টাকা স্থানান্তর করলেন। পাওনা বাকি ৭ লক্ষ টাকা খুব শিগগিরি মিটিয়ে দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
একটি সমবায় মিলে কাজ করতেন ৬৩ বছর বয়সি হেতরাম পাল। অবসরের পর থেকেই প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পেতে কর্তৃপক্ষের দোরে দোরে ঘুরছিলেন। পরিবারের আর্থিক অবনতির কারণে দ্রুত টাকা প্রয়োজন সেকথাও জানিয়ে ছিলেন। যদিও কোনওকিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। জানা গিয়েছে, হেতরাম যে মিলে কাজ করতেন সেখানকার আরও ১০০ জন কর্মী একই সমস্যায় ভুগছেন। তাঁরা ২০১৮ সালে অবসর নিলেও এখনও পর্যন্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পাননি। এদিকে অবসরের পর নিজের সঞ্চয়ের অধিকাংশ টাকা খরচ করে বদাউনের সিভিল লাইনসে একটি বাড়ি কেনেন হেতরাম। ভেবেছিলেন পিএফের টাকা হাতে এলে সামলে নেবেন। মিলের জেনারেল ম্যানেজার রাজীব রাস্তোগির সাফাই, “পিএফ অ্যাকাউন্টের তথ্য সংক্রান্ত কিছু সমস্যা ছিল। হেতরামের জন্ম তারিখ নিয়েও সমস্যা হচ্ছিল।”
হেতরামের ছেলে মহেশ পাল বলেন, “বাবা প্রায় ৪০ বছর ধরে মিলের জন্য কাজ করেছেন। মাসে ২৮ হাজার টাকা উপার্জন করতেন। অবসরের তিন বছর পরেও পিএফ পাননি। লিখিত আবেদন করেও লাভ হয়নি। আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। আমার কোনও স্থায়ী কাজ নেই। এমন অবস্থায় প্রাপ্য টাকাটুকুও হাতছাড়া হবে ভেবে হতাশায় ভুগছিলেন বাবা। এর ফলেই অসুস্থতা বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসা করালেও সুস্থ হয়ে ওঠেননি।”
সোমবার বাবার মৃত্যুর পরেই মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেন মহেশ। থানায় অভিযোগ করেন তিনি। এরপর সার্কেল অফিসার অলোক মিশ্রার উদ্যোগে দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। মিলের জেনারেল ম্যানেজারের নামে সমন বের করেন সার্কেল অফিসার। কিছুক্ষণ পরেই ৩ লাখ টাকা ঢোকে মহেশের মায়ের অ্যাকাউন্টে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.