সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হায়দরাবাদ, উন্নাওয়ের ছায়া এবার ত্রিপুরায়। প্রেমের টোপ দিয়ে নাবালিকাকে বাড়িতে ডেকে দু’মাস ধরে লাগাতার ধর্ষণ করে ‘প্রেমিক’। পরে তার বন্ধুরাও মেয়েটির উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। শেষমেশ প্রমাণ লোপাটের জন্য নাবালিকাকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার সকালে ৯০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। অভিযুক্ত যুবক অজয় রুদ্রপাল ও তার মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ত্রিপুরার এই ঘটনা সামনে আসতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের কাছে বারবার ছুটে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
জানা গিয়েছে, ফেসবুক সূত্রে অজয়ের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার এলাকার সতেরো বছরের ওই কিশোরীর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে। নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে খবর, অজয় ওই নাবালিকাকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাড়িতেও এসেছিল। এর কিছুদিনের মধ্যেই ওই কিশোরীকে বাড়িতে ডেকে পাঠায় অভিযুক্ত। তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেনি কিশোরী। তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণও দাবি করে অজয় ও তার মা। টাকা দিতে না পারায় বাড়িতে আটকে রেখে চলে চরম অত্যাচার। প্রথমে অজয় একা, পরে তার বন্ধুরা যৌন লালসা চরিতার্থ করে।এমনকী মেয়েটিকে খেতে দেওয়া হত না বলেও অভিযোগ।
মেয়েটিকে আটকে রাখার পরই পুলিশের কাছে ছুটেছিল কিশোরীর বাবা-মা। কিন্তু তাঁদের অভিযোগে কান দেয়নি পুলিশ। এরপর আর সময় নষ্ট না করে টাকা জোগাড় করতে শুরু করে নাবালিকার পরিবার। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে অজয়ের মায়ের হাতে ১৭ হাজার টাকা তুলেও দেয় তাঁরা। ৫০ হাজারের বদলে মাত্র ১৭ হাজার টাকা পেয়ে মাথায় খুন চেপে যায় অজয়ের। সঙ্গে সঙ্গে ওই কিশোরীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিশোরীর বাড়িতেও খবর দেয়। সেসময়ও পুলিশের দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতার পরিবার। কিন্ত কোনও লাভ হয়নি। চিকিৎসা চলাকালীন মেয়েটির মৃত্যু হয়। তবে তার আগে পরিবারের কাছে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে দেয় সে।
এদিকে অজয় ও তার মা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে তাদের হাসপাতালে টেনে আনে স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে তাদের বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে দুজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.