শুভময় মণ্ডল, নয়াদিল্লি: বিজেপিকে হারাতেই হবে৷ দেশের জন্য যেকোনও শর্তে জোট করতে রাজি৷ সেই জোটে যদি কংগ্রস-সিপিএম থাকে, তাতেও অসুবিধা নেই৷ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার সাংবাদিক সম্মলনে এ কথা স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আরও একবার তিনি জানালেন, রাজ্যে কংগ্রেস-সিপিএম বিরোধী হলেও জাতীয় স্তরে একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন তাঁরা৷
[কাশ্মীরে বড়সড় জঙ্গি হানা, শহিদ অন্তত ১৮ জওয়ান]
এদিন বিকালে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, তা শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। রাইসিনা হিলে যাওয়ার পিছনে কোনওরকম রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সেই যুক্তি মানতে নারাজ৷ তাঁদের মতে, সৌজন্য সাক্ষাতের আড়ালে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে রামনাথ কোবিন্দের কাছে একরাশ অভিযোগ জানিয়ে আসতে পারেন মমতা। কীভাবে বিরোধীদের ‘কণ্ঠরোধ’ করা হচ্ছে, তা সবিস্তারে বলে আসতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে এদিন নয়াদিল্লির প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়াতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ শুরুতেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিজেপিকে হঠানোর ডাক দেন তিনি৷ এরপর পরিষ্কার করেন জোটের চিত্রটা৷
[ভোটের বাজারে হিট ‘মোদি শাড়ি’, রমরমিয়ে বাড়ছে বিক্রি]
বুধবার কেজরিওয়ালের ধরনা মঞ্চ থেকে যে বক্তব্য পেশ করেছিলেন তিনি৷ এদিনও তার পুনরাবৃত্তি করেন মমতা৷ জানিয়ে দেন, কংগ্রেস-সিপিএমের সঙ্গে রাজ্যের লড়াই রাজ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে৷ তার রেশ এসে পৌঁছবে না রাজধানীতে৷ দেশের স্বার্থে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে সরাতে হবে৷ তাই জাতীয় স্তরে একজোটে লড়াই করবেন তাঁরা৷ বুধবার রাহুল গান্ধীকে পাশে বসিয়ে মমতা ঘোষণা করেছিলেন নির্বাচন পূর্ববর্তী জোটের৷ এদিনও সেই অবস্থানে অনড় থাকেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘নির্বাচনের পর যাতে কোনওরকমের সমস্যা না হয়, সে কারণেই জোট৷’’ যদিও জোটের কোনও প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম মুখেও আনেননি তৃণমূল সুপ্রিমো৷ বুদ্ধি করে এড়িয়ে গিয়েছেন সেই প্রশ্নকে৷
[দায়িত্ব নিয়েই বড় ঘোষণা প্রিয়াঙ্কার, উত্তরপ্রদেশে নয়া জোটসঙ্গী পেল কংগ্রেস ]
বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক চাঁচাছোলা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ কিন্তু খুব দক্ষতার সঙ্গে সেগুলির মোকাবিলা করেন তিনি৷ চিটফান্ড প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর দল ক্ষমতায় আসার আগে থেকে রাজ্যে এই চিটফান্ডের ব্যবসা চলছিল৷ বরং এর তদন্ত শুরু করেছিলেন তাঁরা এবং সিট গঠন করে তদন্ত এগোচ্ছিল৷ বিজেপিকে বিঁধতে সাহারা প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি৷ প্রশ্ন করেন, ‘কোথায় গেল সাহারার লাল ডায়েরি?’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আরও একবার ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে, গতকালই ইচ্ছাপ্রকাশ করেন সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদব৷ যা যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে সপা-সহ মহাজোটকে৷ কারণ এই মহাজোটের অন্যতম প্রধান মুখ সপার সুপ্রিমো তথা মুলায়মের ছেলে অখিলেশ যাদব৷ এদিন সেই বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে৷ তিনি বলেন, ‘‘মুলায়ম জি’র বয়স হয়েছে৷ ওঁকে শ্রদ্ধা করি৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.