সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লিতে মোদি-হাসিনা বৈঠকে ফরাক্কা চুক্তি নিয়ে আলোচনায় আগেই প্রবল আপত্তি জানিয়েছিল তৃণমূল সরকার। বাংলাকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে গঙ্গা-ফরাক্কা চুক্তি নবীকরণে সংক্রান্ত বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) এই বিষয়ে কড়া চিঠি লিখলেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা-ফরাক্কা চুক্তি রয়েছে ২০২৬ সাল অবধি। সোমবার দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে ওই চুক্তি নবীকরণে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে খবর। তবে তিস্তার জলবন্টন নিয়ে আলোচনার কথা জানা যায়নি।
গঙ্গার জল-বণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির মেয়াদই শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে। এই আবহে শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দু’দেশ জল বণ্টন চুক্তি পুনর্নবীকরণের পথে এক পা এগোল বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাকে আড়ালে রেখে ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরিতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে পশ্চিমঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, গঙ্গা-তিস্তার জল-বণ্টন নিয়ে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তির বিরোধী নন। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবান তিনি। সেই কারণেই পড়শি বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথ, রেলপথে যোগযোগ বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তথাপি জল একটি জীবনদায়ি বিষয়। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গবাসীর স্বার্থরক্ষাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৌলকি কর্তব্য। অথচ তাঁকে অন্ধকারে রেখে ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরি করা হয়েছে। যা যুক্তরাষ্ট্রী কাঠামোর পরিপন্থী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠিতে গঙ্গা-পদ্মার গতিপথ-সহ একাধিক ভৌগলিক পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে, পদ্মা নদীর থেকে জলঙ্গী এবং মাথাভাঙা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এর ফলে সুন্দরবন এলাকায় জলসঙ্কট তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে ফারাক্কা ব্যারাজের ফলে ভাগীরথীর জল কমায় কলকাতার বন্দরের নাব্যতা তলানিতে পৌঁছেছে। এছাড়াও মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার গঙ্গা ভাঙনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠির শেষে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভাষায় জানিয়েছেন, গঙ্গা-তিস্তার জল-বণ্টন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত যেন বাংলাকে আড়ালে রেখে না নেওয়া হয়। কোনও পরিস্থিতিতেই যেন পশ্চিমবঙ্গবাসীর স্বার্থে আঘাত না লাগে। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠিতে গঙ্গার মতোই তিস্তার জল-বণ্টন নিয়েও উদ্বেগ থাকলেও হাসিনার সঙ্গে এযাত্রায় তিস্তা নিয়ে মোদির কোনও রকম কথা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.