সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করার পক্ষে শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিল কেন্দ্রীয় সরকার। যেখানে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ‘তিন তালাক প্রথা মুসলিমদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। বিয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে এই প্রথা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’
এদিন আদালতে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ‘তিন তালাক প্রথার শিকার হওয়া মহিলাদের কাছে পুলিশের কাছে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু আইনে যদি এই ঘটনায় শাস্তির বিধান না থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশেরও কিছু করার থাকবে না। ফলে বেআইনি হলেও অবাধে চলতে থাকবে এই প্রথা। যা কোনওভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করতেই দ্রুত কঠোর আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল।’
পাশাপাশি শীর্ষ আদালতকে কেন্দ্র আরও জানায়, “দেশের শীর্ষ আদালত বার বার বলেছে আইন তৈরি করার কাজ আদালতের নয় সংসদের। ফলে আইন কী হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত সংসদ নেবে, আদালত নয়। এবং সংসদ দেশের মানুষের জন্য কোনটা ভালো ও কোনটা খারাপ তা নির্ধারণ করেই আইন তৈরি করে। অপরাধের ক্ষেত্রে তার উপযুক্ত শাস্তি নির্ধারণ করাই সরকারের প্রধান কাজ।” পাশাপাশি কেন্দ্র এটাও আদালত স্মরণ করায় যে শায়রা বানুর ঘটনার পর তিন তালাক অবৈধ ঘোষিত হলেও সমাজে তার কোনও প্রভাব পড়েনি কারণ এখানে শাস্তির বিধান ছিল না।
২০১৭ সালে তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক বলে গণ্য করে দেশের শীর্ষ আদালত। এর পর ২০১৯ সালে সংসদে পাশ হওয়া মুসলিম বিবাহ আইনে এই প্রথাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। যার জেরে কেউ তিন তালাক দিলে তাঁর ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এর পালটা শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করে কেরলের জমাইতুল উলেমা নামে এক সংগঠন। যেখানে বলা হয় ২০১৯ সালে সংসদে পাশ হওয়া আইন অসাংবিধানিক তাকে বাতিল করা হোক। এই আইন মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। ধর্মের ভিত্তিতে এটাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় না। এবার সেই আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.