সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আতঙ্কের মধ্যেই নতুন আতঙ্ক মহারাষ্ট্রের শাসক শিবিরে। সংবিধানের গেরোয় পড়ে কুরসি হারানোর জোগাড় মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের (Uddhav Thackeray)। যা পরিস্থিতি তাতে রাজ্যপাল ‘অনুগ্রহ’ না করলে, আগামী মাসেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে শিব সেনা সুপ্রিমোকে।
ব্যপারটা একটু পরিষ্কার করে বলা যাক। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেও উদ্ধব রাজ্য বিধানসভার দুই কক্ষের কোনওটিরই সদস্য নন। নিয়ম অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর ৬ মাসের মধ্যে রাজ্য বিধানসভায় নির্বাচিত বা মনোনীত হয়ে আসতে হয়। শপথ নেওয়ার সময় উদ্ধবের পরিকল্পনা ছিল ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যের কোনও একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে বিধানসভায় যাবেন তিনি। নিতান্তই যদি তা না হয়, তাহলে দলীয় বিধায়কদের ভোটে বিধান পরিষদে নির্বাচিত হবেন। কিন্তু করোনার জন্য মহারাষ্ট্রে এই মুহূর্তে বিধানসভার কোনও কক্ষেই নির্বাচন হচ্ছে না। এদিকে আগামী ২৮ মে উদ্ধবের ৬ মাস মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর মধ্যে নির্বাচিত হয়ে না আসতে পারলে পদত্যাগ করতে হবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে।
এই মুহূর্তে শিব সেনার (Shiv Sena) কাছে বিকল্প বলতে একমাত্র রাজ্যপাল। মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদে রাজ্যপাল মনোনীত দুই সদস্যের আসন খালি আছে। ওই দুই আসনের সদস্যরা গত বছর নির্বাচনের আগে এনসিপি থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় আসন দুটি ফাঁকা হয়। তাঁদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী ৬ জুন। মুশকিল হল ওই আসন থেকে উদ্ধবের মনোনয়ন নির্ভর করছে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির (Bhagat Singh Koshyari) উপর। উদ্ধবের মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যেই একটি আসন থেকে মনোনয়নের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাব করেছে রাজ্যপালের কাছে। কিন্তু, তিনি সেই প্রস্তাব এখনও গ্রহণ করেননি। এই ধরনের ক্ষেত্রে সাধারণত রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার প্রস্তাব মানতে বাধ্য। কিন্তু এক্ষেত্রে পরিস্থিতি অন্য। কারণ, উদ্ধব নির্বাচিত হলেও তাঁর মেয়াদ থাকবে ৬ জুন পর্যন্ত (কারণ ৬ জুনই ওই আসনের প্রাক্তন সদস্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা)। অর্থাৎ এখন থেকে মাত্র ৪০ দিন পর। রাজ্যপাল চাইলে এত কম সময়ের জন্য কাউকে মনোনীত নাও করতে পারেন। তাই আপাতত সবটাই নির্ভর করছে রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের উপর।
এদিকে এই পরিস্থিতিতে উদ্ধবের কুরসি বাঁচাতে মরিয়া মহারাষ্ট্রের জোট সঙ্গীরা। প্রয়োজনে তাঁরা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আইনি পথেও যেতে পারেন। আর যদি নিতান্তই কোনও উপায় না হয়, তাহলে মেয়াদ শেষের কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করে ফের নতুন করে শপথ নিতে পারেন উদ্ধব। সেক্ষেত্রে আরও ৬ মাস সময় পেয়ে যাবেন তিনি। কিন্তু তারও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.