সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির তথাকথিত খারাপ ফলের অন্যতম কারণ হিসাবে মনে করা হয় আরএসএসের নিস্ক্রিয়তাকে। শোনা যায়, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে সংঘ পরিবার লোকসভায় বিজেপিকে জেতাতে সেভাবে সক্রিয়তা দেখায়নি। বিবাদ যে হয়েছিল, সেটা পরে স্বীকারও করে নেয় আরএসএস। কিন্তু মহারাষ্ট্রের ভোটের আগে সেই বিবাদকে পিছনে ফেলে বিজেপির সমর্থনে এগিয়ে আসতে চাইছে সংঘ পরিবারও। সূত্রের খবর, আরএসএসের তরফে স্বয়ংসেবকদের বার্তা দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে দিনরাত কাজ করে হলেও বিজেপিকে জেতাতে হবে।
মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রচারের সময় আর মাত্র হপ্তা তিনেক। সেই তিন সপ্তাহ ‘ওভারটাইম’ কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংঘ কর্মীদের। সূত্রের খবর, আগামী ৩ সপ্তাহে মহারাষ্ট্রজুড়ে অন্তত ৬০ হাজার ছোটখাট সভা-সমিতি-জনসংযোগের কর্মসূচি নিয়েছে সংঘ। এই বিশাল কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য একটাই, যে কোনও মূল্যে বিজেপি জোটকে ভোটে জেতানো। মূলত, দলিত এবং ওবিসি ভোটারদের টার্গেট করে এই কর্মসূচিগুলি নেওয়া হচ্ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে হিন্দু ঐক্যে। আসলে লোকসভায় বিজেপির দলিত ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছিল কংগ্রেস। সেটা রুখে দিতে চাইছে আরএসএস।
প্রশ্ন হল, বিজেপিকে জেতাতে কেন এত সক্রিয় সংঘ? লোকসভার আগে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যে বিবাদ শুরু হয়েছিল, সেটা কি পুরোপুরি মিটে গেল? সূত্র বলছে, সেই বিবাদ পুরোপুরি না মিটলেও নিজেদের স্বার্থেই আরএসএস মহারাষ্ট্রে বিজেপির জয় চাইছে। মূল কারণ, আগামী বছর আরএসএসের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান। সংঘের সদর দপ্তর নাগপুরে। শতবর্ষ পূর্তিতে নাগপুরের সদর দপ্তরে উদযাপনের আয়োজন করতে চাইছে সংঘ পরিবার। সেই সময় রাজ্যের সরকার তাঁদের অনুকূলে না থাকলে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করছে সংঘ। ভিন্ন মতাদর্শের কোনও সরকার থাকলে সংঘের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে সমস্যা হতে পারে। বাধাও আসতে পারে। সেটা কোনওভাবেই চাইছে না আরএসএস। যে কোনও মূল্যে মহারাষ্ট্রের কুরসিতে নিজেদের পছন্দের মুখ্যমন্ত্রীকে বসাতে চাইছে সংঘ।
তাছাড়া লোকসভার ধাক্কার পর মহারাষ্ট্রেও বিজেপি না জিতলে দেশজুড়ে নেতিবাচক বার্তা যাবে। সেটা সংঘের জন্যও সুখবর হবে না। তাছাড়া সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হিন্দু ঐক্যের গুরুত্ব বোঝাতেও বিজেপির জয় প্রয়োজন বলে মনে করছে সংঘ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.