হেমন্ত মৈথিল: ১৩ জানুয়ারি থেকে প্রয়াগরাজে শুরু হচ্ছে মহাকুম্ভ (Mahakumbh 2025)। তবে বিরাট প্রস্তুতির কোথাও যাতে কোনও গলদ না থাকে তার জন্য কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। জানালেন, কোনও ত্রুটি নজরে এলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, আগামী ১৩ জানুয়ারির মধ্যে সব কাজ শেষ করার ডেডলাইন বেঁধে দিলেন তিনি।
সূত্রের খবর, মহাকুম্ভ পরিচালনায় কোথাও যাতে বিন্দুমাত্র ত্রুটি না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন যোগী আদিত্যনাথ। সেখানে শীর্ষ আধিকারিকদের জানান, তাঁরা যেন লখনউয়ে বসে না থেকে প্রয়াগরাজ যান এবং নিরাপত্তা-সহ পুণ্যার্থীদের জন্য সমস্ত ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন। কোথাও যদি বিন্দুমাত্র ত্রুটি থাকে তাহলে অভিযুক্ত আধিকারিককে রেহাত করা হবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগীর কড়া হুঁশিয়ারির পরই মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে রবিবার প্রয়াগরাজ পৌঁছন উত্তরপ্রদেশের শীর্ষ আধিকারিকরা।
রবিবার প্রয়াগরাজ গিয়েছিলেন নগরোন্নয়নের দপ্তরের প্রধান সচিব অমৃত অভিজিৎ। মেলার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন তিনি। এবং মেলার কোনও অংশে যাতে অন্ধকার না থাকে সেটাও নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা অবনীশ অবস্থি নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত বায়ো টয়লেট যেন পরিস্কার থাকে। এবং সমস্ত তাবুর নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা যেন বজায় রাখা হয়। আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, ১৬টি ঠিকাদারি সংস্থার মাধ্যমে মেলা চত্বরে দেড় লক্ষ টয়লেট বসানো হয়েছে এবং সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই কর্মীদের জন্য আলাদা একটি কলোনি গঠন করা হয়েছে মেলার নির্দিষ্ট একটি অংশে। কেউ যাতে যত্রতত্র মলত্যাগ না করেন তা দেখার জন্য রয়েছে আলাদা স্বেচ্ছাসেবক দল।
মেলা প্রাঙ্গণে ২১০০টি তাঁবু তৈরি করা হয়েছে পুণ্যার্থীদের থাকার জন্য। অনলাইনের মাধ্যমে এগুলি বুক করার ব্যবস্থা করেছে সরকার। সেখানে থাকছে বিছানা ও হিটারের ব্যবস্থা। তাঁবুতে রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও। এছাড়া ওয়াটার স্পোর্টস, অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, ফুড কোর্টও তৈরি হয়েছে। রয়েছে সঙ্গম পর্যন্ত যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ৬৭ হাজারের মধ্যে ৬০ হাজার ২০০টি আলো বসানো হয়েছে। ঘাটগুলোতে আলো বসানোর কাজও চলছে, ৮ জানুয়ারির মধ্যে পার্কিংয়েও আলোর ব্যবস্থা করা হবে। মেলায় ন্যায্যমূল্যের দোকান বসানো হয়েছে। ১০ জানুয়ারি থেকে এইসব দোকানের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে রেশন। মেলার সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে শীর্ষ আধিকারিকদের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সেচ দপ্তরের প্রধান সচিব অনিল গর্গ, পূর্ত দফতরের সচিব অজয় চৌহান, ডিভিশনাল কমিশনার বিজয় বিশ্বাস পন্ত, মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা মৃত্যুঞ্জয় কুমার সিং, ইনফরমেশন ডিরেক্টর শিশির।
এছাড়া বিরাট এই উৎসবের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে শনিবারই প্রয়াগরাজ গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি প্রশান্ত কুমার। শনিবার মেলা প্রাঙ্গণে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রশান্ত কুমার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশমতো সবরকম নিরাপত্তার কাজ সেরে ফেলা হয়েছে। মহাকুম্ভে স্নানপর্বের সময় জল, স্থল ও আকাশ এই তিন জায়গা থেকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। ডিজিপি বলেন, এ এক বিরাট আয়োজন। গোটা পৃথিবী থেকে এবার বিরাট সংখ্যায় মানুষের সমাবেশ হতে চলেছে এখানে। আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ কোটি মানুষ গত ৪৫ দিনে এখানে উপস্থিত হবেন। বিরাট সংখ্যায় বিদেশি পর্যটকরাও আসবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.