সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডের পর এবার উত্তরপ্রদেশ। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান না দেওয়ায় একদল মাদ্রাসা ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে জেরা করে বাকি তিনজনের সন্ধান করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের সাগর এলাকার জামা মসজিদ সংলগ্ন একটি মাদ্রাসার কয়েকজন পড়ুয়া স্থানীয় জিআইসি-এর মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল। সেসময় আচমকা হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের কয়েকজন সদস্য সেখানে এসে উপস্থিত হয়। তারপর মাদ্রাসার ছাত্রদের ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু, তাতে রাজি হয়নি ওই পড়ুয়ারা। তাই তাদের ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকী পরনের জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাদের আক্রমণের ফলে তিন ছাত্রের মাথা ও হাতে আঘাত লাগে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে ওই মাদ্রাসার মৌলানা নইম খান জানান, দারুল উলম ফৈজ-ই-আম মাদ্রাসার ওই ছাত্ররা জিআইসি মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল। এসময় একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা তাদের আক্রমণ করে। মারধরের জেরে ওই পড়ুয়ারা যখন ঘটনাস্থল থেকে পালাচ্ছে তখন তাদের পাথর ছুঁড়েও মারা হয়। এই ঘটনায় তিনজন জখম হওয়ার পাশাপাশি একজনের সাইকেল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় সার্কেল অফিসার উমেশ ত্যাগী। পরে পরিস্থিতি দেখে আক্রান্ত ছাত্রদের হাসপাতালেও পাঠান।
পরে উমেশ ত্যাগী বলেন, “ওই ছাত্ররা সাগর এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে জিআইসি মাঠে খেলতে গিয়েছিল। সেসময় তাদের মারধর করা হয়েছে। পরে আক্রান্তদের অভিযোগের ভিত্তিতে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি তিনজনের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
উন্নাওয়ের পুলিশ সুপার এমপি ভার্মা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে আক্রান্তদের জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছিল কিনা তা তদন্তের পরেই পরিষ্কার হবে।
এদিকে, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বিক্ষোভ দেখানোর হুমকি দিয়েছে মাদ্রাসা এবং জামা মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এপ্রসঙ্গে তারা জানায়, সোশ্যাল মিডিয়া দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে আক্রান্তরা। পরে সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমরা পুলিশকে তুলে দিয়েছি। এখন ওই অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। তারা যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বিক্ষোভ দেখানো হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.