Advertisement
Advertisement
গোয়ালিয়র

২৩ বার ঘায়েল হয়েও থামেননি, ফের নির্বাচনী লড়াইয়ে গোয়ালিয়রের চা-ওয়ালা

২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি পদের জন্যও লড়াই করেছেন আনন্দ সিং কুশওয়া।

Madhya Pradesh tea seller to fight Lok Sabha polls

ছবি: প্রতীকী

Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:April 23, 2019 9:58 am
  • Updated:April 23, 2019 9:58 am  

তরুণকান্তি দাস, গোয়ালিয়র: তিনি চা-ওয়ালা। এই শহরে তাঁর চায়ের সুখ্যাতি কম নয়। রাজার শহর, তাই তিনি জানেন, মেজাজটাই আসল রাজা। ভোট এলেই সেই মেজাজের রাজকীয়তা বেড়ে যায়। তিনি নেমে পড়েন আসরে। তাই ৫০ বছর সদ্য ছুঁয়ে যাওয়া গোয়ালিয়রবাসীর নাম এরই মধ্যে ২৩ বার উঠেছে ব্যালটে বা ইভিএমে। তাঁর কাছে কিন্তু এটা ‘শখ’ নয়- কর্তব্য। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় গোয়ালিয়র স্টেশন থেকে তিন কিলোমিটার দূরে তারাগঞ্জের দোকানে যখন তিনি তাঁর ‘দায়িত্ব পালন’-এর গল্প শোনাচ্ছেন তখন ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। দুধ ফুটছে। গল্প ছড়াচ্ছে তাঁর ‘গণতান্ত্রিক’ চা। ‘আনন্দ টি স্টল’। মালিক: আনন্দ সিং কুশওয়া। তিনি কি কাকা ধরতি সিং পাকড়কে টেক্কা দিতে চান?

[কংগ্রেসের হাত শক্ত না করাই লক্ষ্য, লড়াই ভুলে জোট এনসি-পিডিপির]

Advertisement

এই শহরের একটা মজা হল, কারও কোনও তাড়া নেই। তাই কংগ্রেসের সুশিক্ষিত, সুদর্শন অকালপ্রয়াত ভদ্রলোক নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়ার শহরে এমন মানুষ থাকবেন, তার মধ্যে কোনও বড় অস্বাভাবিকতা নেই। তার থেকেও বড় কথা হল, তারাগঞ্জে ‘চা-ওয়ালা নেতা’-কে খুঁজে পেতে যা কষ্ট হল, তার চেয়ে জল গিলে খেতে কষ্ট বেশি। ‘‘আইয়ে স্যর”। পরিচয় পেয়েই বিগলিত হাসি, “আমার কাছে বাংলার কোনও সাংবাদিক আসেননি।” দোকানে গুচ্ছের বয়াম। ইয়া বড় একটা কড়াইতে দুধ ফুটছে। তিনি একখানা বড় বয়াম থেকে চিনি এবং আটার চেয়ে সামান্য মোটা দানার চিনির গুঁড়োর চা-জল মিশিয়ে ঠকাস করে গ্লাস নামিয়ে রাখছেন সবার সামনে। একেবারে আমাদের কলেজ স্ট্রিট-ডালহৌসি-বড়বাজার বা জেলা শহরের ব্যস্ততম মার্কেট প্লেসের চা-ঘর।

‘চায়ে পিজিয়ে’, বলেই জামার ঝুলে থাকা অংশে হাত মুছে নেন। তারপর খদ্দেরদের একটু সামলে বেরিয়ে এসে পাশে বসেন। মোটা গোঁফ। বড় চেহারা। রাজপুত ঘরানা। বলছেন, “দেখুন, আমি চাই মানুষ ভোট দিক এবং সকলেই নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করুক। এটা তো গণতন্ত্রের জয়। আমি তো মনোনয়নপত্রের জন্য নির্বাচন কমিশন যে টাকা নিচ্ছে তার বিরোধী। ভোট কি ব্যবসা না কি? এখান থেকেই তাঁর নানা আন্দোলন। তিনি রাষ্ট্রপতিও হতে লড়েছিলেন ২০১৭ সালে। উপরাষ্ট্রপতির জন্য মনোনয়ন পেশ করেছিলেন। গোয়ালিয়র পুর নির্বাচনে লড়েছেন। বহুজন সমাজ পার্টি তাঁকে সমর্থনও করেছিল। বিধায়ক, সাংসদ সব ক্ষেত্রে জিততেই চেষ্টা করেছেন। হয়নি। তবে তাঁর বিশ্বাস, এবার হবে। এই নিয়ে ২৪ বার তাঁর নাম উঠল প্রার্থী হিসাবে।

কিন্তু মনোনয়ন পেশের খরচ? প্রচারের ব্যয়? ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর জন্য বাড়িতে অশান্তি হয় না? হাসেন আনন্দ। তাঁর হলফনামা বলছে, সম্পত্তি বলতে একটা সাইকেল, ছোট একটুখানি মাথা গোঁজার জায়গা, লাখ খানেক টাকা। এই নিয়েই তিনি গতবার বিজেপির ক্যাবিনেট মন্ত্রী নারায়ণ সিংয়ের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। “বাড়িতে সবাই বুঝেছে এই লোক ‘জিদ্দি’ আছে, তাই এখন কিছু বলা ছেড়ে দিয়েছে।” বলেন চা-ওয়ালা। চা খতম। উঠতে যাচ্ছি। এমন সময় বললেন, “এবার হলফনামায় লিখেছি আমার বউয়ের একটা হাজার বিশেক টাকার মঙ্গলসূত্র আছে। গতবার জানাতে ভুলে গিয়েছিলাম।” একটা ঝটকা লাগে। এই চা-ওয়ালার চা বেশ কড়া।

[বিজেপিতে যোগ দিলেন হেয়ার স্টাইলিস্ট জাভেদ হাবিব]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement