সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কন্যাভ্রুণ বাঁচাতে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ রাজ্যের ‘কন্যাশ্রী’ তো আবার বিশ্ব দরবারের স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এইসব প্রকল্পের কথা কী আদৌএ জানেন মধ্যপ্রদেশের বানজারা সম্প্রদায়ের মানুষেরা? উত্তর জানা নেই। তবে এই সম্প্রদায়ে কারও ঘরে কন্যাসন্তান জন্মালে মায়ের যত্মআত্তি বেড়ে যায়। কেন জানেন? বানজারা সম্প্রদায়ের কাছে মেয়ে মানে যৌনকর্মী! শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটাই ঘোরতর বাস্তব। একজন মেয়ে মানে, আরও একজন যৌনকর্মী। এই ভাবনা থেকেই কন্যাসন্তান কামনা করেন এঁরা!
[মোদির নামে গ্রামের নামকরণ, তরোয়ালের কোপে মুণ্ডচ্ছেদ ‘দুঃসাহসী’ বৃদ্ধর]
বংশ পরম্পরায় গণিকাবৃত্তিকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন মধ্যপ্রদেশের বানজারা সম্প্রদায়ের মহিলারা। পুরুষরা নন, শরীর বিক্রি করে পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় মেয়েরাই এবং এতে অসম্মানের কিছু আছে বলেও মনে করেন তাঁরা। জন্মের পর থেকে বানজারা সম্প্রদায়ের মেয়েদের রীতিমতো যৌনকর্মীর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মধ্যপ্রদেশের নিমাচ, রাতলাম, মান্দসর এলাকায় বাস এই সম্প্রদায়ের। প্রশাসনের চোখের সামনেই দিনের দিন গণিকাবৃত্তি করেই জীবন নির্বাহ করছেন সম্প্রদায়ের মহিলারা। আর পুরুষরা বাড়িতে বসে থাকে। মা, স্ত্রী বা মেয়ের আয়েই দিন চলে তাঁদের। শুধু মধ্যপ্রদেশেই বা বলি কেন, গোটা দেশে নিজেদের স্বার্থে মহিলা কেনাবেচার করেন বানজারা-রা। ২০০৯ সালে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী জেলা থেকে মাত্র ৫০০ টাকা স্ট্যাম্প পেপারে সই করে ৬ বছরের এক কিশোরীকে কিনে আনা হয়েছিল। তাঁদের জীবনযাত্রা ও মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নয়া আভা সামাজিক চেতনা সমিতি নামে একটি অ-সরকারি সংস্থা। সংস্থার কর্ণধার আকাশ চৌহান বলেন, পরিবারের প্রত্যেকেই জীবনধারণের জন্য মেয়েদের রোজগারের উপরই নির্ভরশীল। আইনি বৈধতা না থাকলেও পরিবারের পুরুষই একপ্রকার বাধ্যতামূলকভাবে স্ত্রী-কন্যাদের যৌনকর্মী হিসাবেই কাজ করতে পাঠান।
[বিয়েবাড়িতে নর্তকীকে কোলে তুলে নাচলেন লালুর দলের নেতা, ভিডিও ভাইরাল]
মধ্যপ্রদেশের একটি জেলার ৭৫টি গ্রামে বসবাস করেন বানজারা সম্প্রদায়ের মানুষেরা। জনসংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বাসিন্দাদের ৬৫ শতাংশই মহিলা এবং একটা বয়েসের পর প্রত্যেক মহিলাই গণিকাবৃত্তি করেন। এমনকী, গণিকাবৃত্তিতে নামানোর জন্য মধ্যপ্রদেশের অন্যপ্রান্ত থেকে মেয়েদের কিনে আনেন এঁরা। তাই এই সম্প্রদায়ের মেয়েদের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ভুল কাজে তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, শুধুমাত্র পুলিশ-প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে এই ভয়াবহ প্রথা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তৈরি করতে হবে সামাজিক সচেতনতা। নিমাচের ডিএসপি টি কে বিদ্যার্থীর জানিয়েছেন, শিক্ষিত মেয়েদের সরকারি পরীক্ষায় বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
[অঙ্গদান ইসলাম বিরোধী! অভিযোগে ফতোয়া মুসলিম চিকিৎসকের বিরুদ্ধে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.