সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মিলবে সুন্দরী বউ। সুযোগ রয়েছে ভালো জায়গায় চাকরির। এমন লোভনীয় প্রস্তাব ফেরাতে পারেননি হরিয়ানার দুই যুবক। এজেন্টদের সেই ফাঁদে পা দিয়েই ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়েন তাঁরা। অভিযোগ, বউ, চাকরি তো দূরের কথা উলটে তাঁদের রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে চাপ দেওয়া হয় ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য। আর তাতে রাজি না হওয়ায় কপালে জোটে বেধড়ক মারধর। খাওয়া বন্ধ রেখে ক্যাম্পে আটকে রেখে চলে অত্যাচার। সেই ‘নরককুণ্ডে’র হাড়হিম অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন রুশ ফেরত দুই যুবক।
জানা গিয়েছে, হরিয়ানার কার্নালের দুই ভাই মুকেশ (২১) ও সানিকে (২৪) জার্মানিতে কাজের টোপ দিয়েছিলেন ট্রাভেল এজেন্টরা। কথা ছিল সেদেশের একটি হোটেলে ভালো চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হবে। কিন্তু জার্মানির বদলে প্রথমে তাঁদের পাঠানো হয় ব্যাংককে। সেখান থেকে বেলারুশ হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাশিয়ার। রুশ সীমান্তের জঙ্গলে একটি ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল তাঁদের। সেখানে মুকেশ ও সানির সঙ্গে মূলত দক্ষিণ এশিয়ার আরও ২০০-র উপর যুবককে আটকে রাখা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে কার্নালের দুই ভাই জানান, “রাশিয়ার নিয়ে যাওয়ার পর তথাকথিত ওই ট্রাভেল এজেন্টরা সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য জোর করেন। বদলে সেখানে চাকরি, রুশ বউ ও রাশিয়ার পাসপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু আমরা সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধ করতে অস্বীকার করায় আমাদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। ১৫ দিন আমাদের খেতে দেওয়া হয়নি। গরম কাঠ দিয়ে আমাদের মারা হয়। ছুরি ও বন্দুক তাক করে বরফের উপর শুতেও বাধ্য করা হয়। তার পর উপযুক্ত নথি ছাড়া সেদেশে প্রবেশ করার অপরাধে মস্কোর একটি জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের সঙ্গে আরও ২০০ জন ছেলে ওই নরকে ছিল। তাঁরা যেন সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন আমরা সেই প্রার্থনাই করি।”
ওই যুবকদের কথায়, এক রুশ আইনজীবী তাঁদের মস্কোর জেল থেকে বের করে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করেছিলেন। মস্কোর ওই জেলে তাঁদের আরও দুই বন্ধু এখনও বন্দি রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে একজন পাকিস্তানের বাসিন্দা ও অন্যজন পাঞ্জাবের। এই মুহূর্তে তাঁদের পরিবার খুবই উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। জানা গিয়েছে, মুকেশ ও সানির পরিবার স্থানীয় থানায় এক মহিলা-সহ ৬ জন ট্রাভেল এজেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ওই থানার তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, একটি এফআইআর দায়ের করে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.