সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৫ অক্টোবর, ১৯৮৭৷ ভারতীয় সেনার ৫৪ আর্টিলারি ব্রিগেডের সৈন্যরা বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রহরায়৷ ভিতরে রয়েছে কয়েকজন বন্দি৷ সেনাঘাঁটিতে তখন চাপা উত্তেজনা৷ ঠিক তখনই বন্দিদের জন্য খাবারের বাক্স নিয়ে এল একটি লোক৷ নিয়ম মেনেই তল্লাশি করে তাকে ছেড়ে দেন জওয়ানরা৷ ঘুণাক্ষরেও তাঁরা বুঝতে পারেননি খাবারের বাক্সগুলিতে রয়েছে মারাত্মক ‘সায়ানাইড ক্যাপসুল’৷ একটি ভুলেই ভারতের ইতিহাসে পাল্টে গেল অনেক কিছু৷
সকাল ১০ টা৷ প্যারা কমান্ডো টিমের লিডার মেজর শিওনান সিংয়ের কাছে একটি নির্দেশ এল৷ ডিভিশন হেডকোয়ার্টারস থেকে বলা হয়েছে, তিনি যেন সেদিনই এলটিটিই বন্দিদের শ্রীলঙ্কা সেনার হাতে তুলে দেন৷ কিছুটা অসন্তোষ ফুটে ওঠে তাঁর মুখে৷ ইতিমধ্যে, বন্দি হস্তান্তর নিয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে৷ তামিল বন্দিরাও বারবার অনুরোধ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার সেনার হাতে ভারত যেন তাদের তুলে না দেয়৷ শিওনান সিং স্পষ্ট বুঝতে পারছিলেন যে, তামিল বন্দিদের শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে দিলে তার ফল ভারতের জন্য ভালো হবে না৷ তিনি বারবার ওপরওয়ালাদের অনুরোধ করেন যেন বন্দিদের শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে না দেওয়া হয়৷ সে অনুরোধ অগ্রাহ্য হয়৷ তাই নির্দেশমতো বিকেল ৪ টের সময় তিনি তামিল বন্দিদের তুলে দেন শ্রীলঙ্কার হাতে৷ তারপর সেখান থেকে তিনি চলে আসেন নিজের ঘাঁটিতে৷ কিছুক্ষণ বাদেই, ডিভিশন হেডকোয়ার্টারস থেকে তাঁর কাছে আবার নির্দেশ আসে৷ বলা হয়, শিওনান সিং যেন বন্দিদের ফের হেফাজতে নিয়ে নেন৷ পরিস্থিতি স্পষ্ট হওয়ার আগেই আবার খবর আসে যে ১৩ জন এলটিটি বন্দি সায়ানাইড ক্যাপসুল খেয়ে আত্মহত্যা করেছে৷
এরপরই ভারতের জন্য পাল্টে যায় পরিস্থিতি৷ সদস্যদের আত্মহত্যায় প্রচন্ড রেগে যায় তামিল জঙ্গি সংগঠনটি৷ ৫ অক্টোবর ১৯৮৭ সালের ওই ঘটনায় ভয়ানক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পরে ভারতীয় সেনা ও এলটিটিই৷ শুধু তাই নয় এর ফলেই ১৯৯১ সালে তামিল জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারান প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী৷
তোলাবাজ ওয়ার্ডেনকে টাকা দিতে রক্ত বিক্রির সিদ্ধান্ত ২ আদিবাসী ছাত্রীর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.