রশিদ ও মুসকান
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাভ জেহাদ (Love Jihad) আইন চালু হওয়ার পর ভারতের প্রথম মহিলা হিসেবে আটক হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুসকান জাহান (Muskan Jahan)। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁর স্বামীকে। জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগও উঠেছিল। মঙ্গলবার মুখ খুলেছেন মুসকান। জানিয়েছেন, লাভ জেহাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তিনি ওই মুসলিম যুবককে বিয়ে ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বেচ্ছায়।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। এদিকে হাসপাতাল ছাড়াও যে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে তাঁকে রাখা হয়েছিল সেই প্রশাসনকেও নিজের গর্ভপাতের জন্য দায়ী করেছেন মোরাদাবাদের মুসকান। তাঁর অভিযোগ, তাদের অবহেলার জন্যই তিন মাসের অন্ত্ব:সত্ত্বা অবস্থায় গর্ভপাত হয়ে যায় তাঁর। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
তিনি যা করেছেন তা স্বেচ্ছায় করেছেন বলেও জানিয়েছেন মুসকান। তাঁর কথায়, ‘‘আমি আমার বিয়েতে খুশি। বাবা-মায়ের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেই বিয়ে করেছি।’’ গত সোমবার জেলাশাসককেও একই কথা জানান। সেই সঙ্গে তাঁর স্বামী রশিদ ও বড় ভাই মহম্মদ সেলিমের অবিলম্বে মুক্তির আবেদনও জানান।
ইতিমধ্যে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মুসকানকে। তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু এখনও ভুলতে পারছেন না গর্ভপাতের যন্ত্রণা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তিনদিন ধরে আমার পেটে ব্যথা হচ্ছিল। কিন্তু ওরা আমার কোনও কথায় কান দেয়নি। পরে শরীর একেবারে ভেঙে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ হাসপাতালে ইঞ্জেকশন ও ওষুধপত্র দিয়ে তাঁর সন্তানকে খুন করানোর অভিযোগকে অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কান্থ থানার ইন্সপেক্টর অজয় গৌতম। তাঁর দাবি, এটা একেবারেই ‘ভুয়ো খবর’। যদিও মুসকানের নিজের স্পষ্ট অভিযোগ, হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দিয়ে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানকে খুন করা হয়েছে।
গত ২৪ জুলাই বিয়ে করেছিলেন রশিদ ও মুসকান। বিয়ের আগে মুসকানের নাম ছিল পিঙ্কি। তাঁর মায়ের অভিযোগ, নিজেকে হিন্দু পরিচয় দিয়ে তাঁর মেয়েকে বিয়ে করেছেন রশিদ। এরপরই নতুন আইনের বলে গত ৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় রশিদকে। কিন্তু এই অভিযোগকে মিথ্যে বলে দাবি করে মুসকানের অভিযোগ, তিনি ভাল ভাবেই জানতেন রশিদ মুসলিম। ৬ ডিসেম্বর আদালতে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাচ্ছিলেন তাঁরা। তখনই হিন্দু কট্টরপন্থীরা তাঁদের পথ আটকে থানায় নিয়ে যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.