সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ এক অদ্ভুত রসায়ন। তামিলনাড়ুর বিখ্যাত মন্দির শ্রীরঙ্গমে দেবতার মূর্তির পাশেই রাখা আছে এক মুসলিম নারীর ছবি। আশ্চর্য লাগলেও, এটাই সত্যি। কাবেরী ও কোল্লিদাম নদীর মাঝ বরাবর দ্বীপে বহু প্রাচীন এই বৈষ্ণব মন্দিরের এটাই রীতি। এই মন্দিরে পূজিত হন শ্রীরনগানথার।
[ছাদনাতলা বাস, অভিনব বিয়ের আসর যুগলের]
কথিত আছে, ওই মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন দেবতা শ্রীরনগানথার৷ কিছু নির্দেশ নাকি দেন ওই দেবতা। এরপরই সেই স্বপ্নের কথা অন্যান্য পুরোহিত এবং মন্দির কর্তৃপক্ষকে জানান প্রধান পুরোহিত৷ স্বপ্নাদেশে দেবতা আদেশ দেন যে, সঠিক নিয়ম মেনে যেন তাঁর পছন্দের মুসলিম সঙ্গিনীকেই স্ত্রী হিসেবে মন্দিরে প্রবেশ করানো হয়৷ সেই স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী আজও ওই মন্দিরে রানগানথার দেবতার মূর্তির পাশে ওই মুসলিম নারীর ছবি দেওয়ালে টাঙানো রয়েছে৷ শুধু তাই নয় নিয়ম করে তিনি পূজিতাও হন।
[বউ বদলে দিব্যি সুখে ঘর করছে দুই যুবক]
ওপরের কথিত থাকা অংশটি অনেকে জানলেও, আর একটি ঘটনা কিন্তু প্রায় বেশিরভাগ মানুষের কাছেই অজানা। মনে করা হয়, স্বপ্নাদেশ নয়, এই ঘটনাটিই নাকি ওই মুসলিম নারীর পূজিতা হওয়ার কারণ। ঘটনাটি হল, দিল্লির সুলতান মালিক কাফুর দক্ষিণ ভারতের এই মন্দিরটিতে আক্রমণ করেন। চলে যথেচ্ছ লুটপাট। কিন্তু প্রধান পুরোহিত কোনওমতে মন্দিরটির গর্ভগৃহকে বাঁচাতে সক্ষম হন। কিন্তু পঞ্চধাতুর তৈরি রনগানথারের একটি ছোট মূর্তি তিনি রক্ষা করতে পারেননি৷ প্রচুর ধনরত্ন ও সম্পদ নিয়ে দিল্লি ফিরে যান সুলতান।
[ফরাসি প্রেসিডেন্টের মেক আপের পিছনেই খরচ হচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা!]
দিল্লিতেই সেই মূর্তি নজরে পড়ে এক মুসলিম রাজকন্যার। তখনই মূর্তিটির প্রেমে পড়ে যান তিনি। এদিকে, শ্রীরঙ্গমের কিছু মানুষ সাহস করে সমবেত হয়ে ওই মূর্তিটি ফেরত দেওয়ার আরজি জানান দিল্লির সুলতানকে। মন্দিরে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয় মূর্তিটি। কিন্তু রাজকন্যা মূর্তিটি কিছুতেই ছাড়তে রাজি হননি। মূর্তিটি নিয়ে তিনিও চলে আসেন শ্রীরঙ্গমের মন্দিরে। নিজের বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেন তাঁকে সঙ্গী করেই।
সেই গভীর প্রেম ও বিশ্বাসকে সম্মান জানিয়েই আজও দেবতার মূর্তির সাথেই পূজিতা হয়ে চলেছেন ওই মুসলিম রাজকন্যা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.