সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তদশ লোকসভা ভোটের প্রচার শেষ। রবিবারই শেষ হয়ে যাবে ভোট উৎসব। তারপরই রাজনৈতিক দল এবং তাদের সমর্থকরা উৎকণ্ঠার সঙ্গে অপেক্ষা করবে ২৩ মে পর্যন্ত। ফলাফলের জন্য। তার আগে থেকেই অবশ্য জোটের অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, তারা আত্মবিশ্বাসী এবারের লোকসভায় কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। তাই সোনিয়া গান্ধী নিজেই জোট গঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। সেই তুলনায় কিছুটা রয়েসয়ে এগোচ্ছে বিজেপি। গেরুয়া শিবির এখনও আশাবাদী বর্তমান এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে।
কিন্তু, যদি তা নয় তাহলেও সঙ্গী জোটাতে খুব একটা সমস্যা হবে না বলেই মনে করছে বিজেপি। তার কারণ, বিজেপির কয়েকজন বিশ্বস্ত বন্ধু এবারের লোকসভায় ভাল ফল করার ব্যপারে আশাবাদী। কারা সেই সঙ্গী?
বিজেডি: বিজেপির বন্ধুতালিকা তৈরি করতে গেলে সবার প্রথমেই উচ্চারিত হবে ওড়িশার বিজু জনতা দলের নাম। নবীন পট্টনায়েক বিজেপির দুঃসময়ের বন্ধু। যখনই প্রয়োজন তখনই পাশে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি লোকসভাতেও একাধিক ইস্যুতে ভোটদানে বিরত থেকেছে বিজু জনতা দল। নবীন পট্টনায়েক সব দলের জন্যই নিজের দরজা খোলা রেখেছেন সব দলের জন্যই। তবে, ফণীর পর যেভাবে মোদি-নবীনের সখ্যতা দেখা গিয়েছে, তাতে পট্টনায়েক বিজেপির দিকেই ঝুঁকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত লোকসভায় ওড়িশার ২১টি আসনের মধ্যে ২০টিতেই জিতেছিল বিজেডি। এবারে ওড়িশায় বিজেপির আসনসংখ্যা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষত্রেও ১০-১৫টি আসন পেতে পারেন পট্টনায়েক।
টিআরএস: কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি। কেসিআর মুখে তৃতীয় ফ্রন্টের কথা বললেও তাঁর সঙ্গে মোদির সম্পর্ক ভাল। আবার, তেলেঙ্গানায় তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। তাই কংগ্রেসের বিপক্ষে তিনি যেতে চাইবেন সেটাই স্বাভাবিক। যদিও, কেসিআর নিজে তৃতীয় ফ্রন্ট তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। তাতে সাড়া মেলেনি। কংগ্রেস অবশ্য ইতিমধ্যেই তাঁকে দলে টানার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে। ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। যদিও, শেষ বেশ চন্দ্রশেখর রাও গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে হাত মেলালে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তেলেঙ্গানার ১৭টি আসনের বেশিরভাগই চন্দ্রশেখর রাও-এর দল জিততে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি: অনেকে বলছেন অন্ধ্র রাজনীতিতে এবছর পালাবদলের সময়। চন্দ্রবাবু নায়ডুর জনপ্রিয়তা কমছে, জগনমোহন রেড্ডির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তাছাড়া এবছর নায়ডু শিবির বদল করে এনডিএর তীব্র বিরোধিতা করছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই জগনের দিকে নজর রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। জগনমোহন রেড্ডি ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, যে দল অন্ধ্রপ্রদেশের স্বার্থের কথা ভাববে তিনি তাঁকেই সমর্থন করবেন। তাই বিজেপির নজর রয়েছে, জগনের দিকে। গত লোকসভায় অন্ধ্রে ওয়াইএসআর কংগ্রেস পেয়েছিল ৯টি আসন। তবে, এবার এই সংখ্যাটা বাড়তে পারে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
এছাড়া বিজেপির জোটে ইতিমধ্যেই রয়েছে শিব সেনা, জেডিইউ, এআইএডিএমকের মতো দলগুলি। তাতেও সংখ্যা কম পড়লে মায়াবতীকেও টার্গেট করতে পারেন অমিত শাহ’রা। যদিও, সম্প্রতি মোদি-মায়াবতীর ব্যক্তিগতস্তরে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির পর সেটা কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় থাকছে। সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি যদি বিজেপি জোট ২৪০-এর আশেপাশে পৌঁছে যায়, তাহলেও সরকার গঠনের উপযুক্ত সংখ্যা পয়ে যেতে পারে গেরুয়া শিবির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.