Advertisement
Advertisement

Breaking News

Waqf bill

তুমুল হট্টগোলের মাঝে লোকসভায় পাস ওয়াকফ বিল, ১২ ঘণ্টার ম্যারাথন তরজায় মহানাটক দেখল সদন

সদনে আলোচনা চলাকালীন মহাত্মা গান্ধীর প্রসঙ্গ টেনে বিলের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলেন সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েসি।

Lok Sabha passes Waqf Bill
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:April 3, 2025 8:03 am
  • Updated:April 3, 2025 8:27 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তুমুল হট্টগোলের মাঝে লোকসভায় পাস বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ১২ ঘণ্টার ম্যারাথন বিতর্কে মহানাটক দেখল সদন। এদিন সদনে আলোচনা চলাকালীন মহাত্মা গান্ধীর প্রসঙ্গ টেনে বিলের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলেন সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। সবশেষে ২৮৮ ভোট পেয়ে পাশ হয়ে যায় বিলটি। বিপক্ষে পড়ে ২৩২টি ভোট। আজ তা পেশ হবে রাজ্যসভায়।              

বিগত লোকসভায় শক্তিহ্রাস পেয়েছে বিজেপির। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে পদ্মশিবির। মোদি-শাহরা এখন শরিক নির্ভর। ফলে ওয়াকফের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে মেপে পা ফেলতে হচ্ছে তাঁদের। চলতি বছরের গোড়ার দিকেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে নীতীশ কুমারের দল জেডিইউর ‘মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে’র কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে গেরুয়া কৌশলীদের। একই যুক্তি খাটে চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি-র ক্ষেত্রেও। ফলে লাভ-ক্ষতির অঙ্কে শরিকদের সহমতি আদায়ও খুব সহজ ছিল না। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করে মোদি সরকার। মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ১২ ঘণ্টারও বেশি ম্যারাথন বিতর্কে মহানাটকের সাক্ষী থাকে সদন। ফ্লোরে আলোচনা চলাকালীন মহাত্মা গান্ধীর প্রসঙ্গ টেনে বিলের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলেন সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। প্রতিবাদে সরব হয় কংগ্রেস, তৃণমুল ক্ংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা। তবে এক্ষেত্রেও শেষ হাসি হাসল শাসকদল। ২৮৮ ভোট পেয়ে পাশ হয়ে যায় বিলটি। বিপক্ষে পড়ে ২৩২টি ভোট। আজ তা পেশ হবে রাজ্যসভায়।               

Advertisement

বিশ্লেষকদের মতে, ‘সেকুলার বনাম কমিউনাল’ ন্যারেটিভই ছিল বিরোধীদের বড় হাতিয়ার। কেন্দ্রের শাসকজোট এনডিএ-র মধ্যে সংখ্যালঘু ব্যালট নিয়ে দোলাচল ছিল না এমনটা নয়। তবে ভোটবাক্সে লাভক্ষতির অঙ্কে আপাতত জোটের ‘চালিকাশক্তি’ বিজেপির লাইনেই মুনাফা দেখছে শরিকরা। হিন্দু ভোটের মেরুকরণে ব্যালটে ফারাক ঘোচানো যাবে বলেই মনে করছেন নীতিশ-চন্দ্রবাবুরা। একইভাবে, অঙ্কশাস্ত্রের নিয়ম মতেই রাজ্যসভাতেও ওয়াকফ পরীক্ষায় সরকার উতরে যাবে।          

ওয়াকফ কী?
ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা যে সম্পত্তি ধর্মপ্রচার এবং সমাজের উন্নতিকল্পে দান করেন, সেটাকে ওয়াকফ বলে। এই ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না বা ব্যবসায়ীক স্বার্থে ব্যবহার করা যায় না। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ওয়াকফ আসলে ঈশ্বরের সম্পত্তি।

প্রস্তাবিত ওয়াকফ সংশোধনী বিলে কী আছে?

বর্তমান ওয়াকফ বিলের ৪০ নম্বর ধারা আইন অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডের দখল করা সম্পত্তি বা জমিতে কোনরকম সরকারি পর্যালোচনা বা রিভিউ করা যায় না। পর্যালোচনা ছাড়াই ওয়াকফ বোর্ড জমি দখল করতে পারে। কোনও সম্পত্তি নিয়ে ব্যক্তিগত মালিকানা এবং ওয়াকফ বোর্ডের আইনি বিবাদ চললেও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না সরকার। সরকার এই আইনেই মূলত ওয়াকফ অধিকার খর্ব করতে চাইছে। বিতর্কিত কোনও সম্পত্তির মালিকানা আদতে কার, তাও খতিয়ে দেখার আইনি এক্তিয়ার সরকার নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে। আরও একাধিক ক্ষেত্রে ওয়াকফ বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার খর্ব করা হতে পারে। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। এর পাশাপাশি আপত্তি উঠেছে নতুন বিলে ওয়াকফ বোর্ডে দুই অমুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তির বন্দোবস্ত নিয়েও। এ ছাড়া রয়েছে, একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব। পুরনো আইন অনুযায়ী কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করলে, চিরদিনের জন্য সেটি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবেই থেকে যেত। নতুন বিল পাশ হলে এবার সেটাকেও চ্যালেঞ্জ করা যাবে। ফলে যে সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডের বলে ঘোষণা করে, তাতে ইসলামিক ধর্মস্থান বা অন্য কোনও ইসলামিক প্রার্থনাস্থল তৈরি হলেও সেটাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে দাবি করা যেতে পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement