স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: বঙ্গ নেতৃত্ব এবং তাদের বন্ধু বামেরা যাই বলুক না কেন, ‘ইন্ডিয়া’তে তৃণমূল কংগ্রেস কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, আরও একবার তা স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। ২৪, আকবর রোডের সদর দপ্তরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন, শনিবারের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) না থাকা নিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার কিছু নেই। সেদিন রাজ্যে নির্বাচন(Lok Sabha Election 2024), যার মধ্যে রয়েছে অভিষেকের কেন্দ্রও। সেখানে ব্যস্ত থাকবেন বলেই বৈঠকে আসতে পারবেন না মমতা। তাছাড়া ১ জুনের বৈঠকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনও আলোচনাও হবে না। সেদিনের মূল বিষয়বস্তু হল, ৪ জুন গণনার দিন ‘ইন্ডিয়া’কে কী কী বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, কর্মীদের কাছে কী কী বার্তা ও নির্দেশ দেওয়া হবে, তার রূপরেখা তৈরি করা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২ জুন তিহাড় জেলে আত্মসমর্পণ করতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে (Arvind Kejriwal)। ফলে তাঁকে পেতে হলে তার আগেই আলোচনায় বসতে হত ‘ইন্ডিয়া’কে। যদিও সেদিন রাজ্যের নয়টি কেন্দ্রে নির্বাচন থাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগেই মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন বৈঠকে থাকতে পারবেন না। কংগ্রেসের (Congress) দাবি, পরবর্তীতে চিঠি লিখেও বিষয়টি খাড়গেকে জানিয়েছেন মমতা। ১ জুনের বৈঠকে মমতার আসতে না পারার প্রসঙ্গে এদিন খাড়গের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সেদিনের বৈঠক পুরোটাই ঘরোয়া। ভোট গণনার দিন আমাদের কী কী বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত, তাই নিয়ে আলোচনা হবে। উনি আমায় লিখেছেন, সেদিন নির্বাচনে ব্যস্ত থাকবেন। তাছাড়া সেদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কেন্দ্রেও নির্বাচন রয়েছে। তাই উনি ব্যস্ত থাকবেন বলেই আসতে পারবেন না। এতে বড় কিছু নেই।”
৪ জুন গণনার শেষে দেশে মোদি (Narendra Modi) জমানার পতন হবে, এই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস। ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত হয়ে যাবে, সেই কথাও জানিয়েছে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে খাড়গের দাবি, “শেষ দু’সপ্তাহে ২৩২ বার কংগ্রেসের ও ৫৭৩ বার ‘ইন্ডিয়া’র নাম নিয়েছেন মোদি। অথচ বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো জ্বলন্ত সমস্যার কথা উচ্চারণও করেননি। কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, জাতপাত বা সাম্প্রদায়িক ভাষণ দেওয়া যাবে না। অথচ মন্দির, মসজিদ, মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্ম নিয়ে ৪২১ বার ও মুসলমান, পাকিস্তান, সংখ্যালঘু এই শব্দগুলি উচ্চারণ করেছেন ২২৪ বার।” গত কয়েক বছরের প্রবণতার বিরুদ্ধে গিয়ে ২০৬টি জনসভা করেছেন মোদি। ৮০টি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে খাড়গের বক্তব্য, “কুছ তো গড়বড় হ্যায়। গত দুবার তো এসব করতে দেখা যায়নি। এবার কেন এত ছুটছেন। আসলে উনিও বুঝতে পেরেছেন বিদায় নিশ্চিত।”
নরেন্দ্র মোদির ধ্যানে বসা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ‘ইন্ডিয়া’র বক্তব্য, প্রচারের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরও প্রচারে থাকতে এই কৌশল নিয়েছেন মোদি। তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কমিশনে নালিশ জানিয়েছে কংগ্রেস। এদিন আরও একবার এর বিরোধিতা করে কংগ্রেস। দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, “১ জুনের পর উনি ধ্যানে বসুন না, কে বারণ করেছে? সবথেকে বড় কথা, ৪ তারিখের পর তো এমনিতেই ওঁকে ধ্যানে যেতে হবে। তখন তো আর কোনও কাজও থাকবে না।” মোদ্দা কথা, শেষ দফার নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে, ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে চূড়ান্ত আশাবাদী কংগ্রেস। দেখার শুধু আগামী মঙ্গলবারের ছবিটা ঠিক কী হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.