সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেঠি এবং রায়বরেলি। গান্ধী পরিবারের মনের মণিকোঠায় থাকা দুই কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি কংগ্রেস। অথচ মনোনয়ন পেশের জন্য হাতে সময় মাত্র দিন দুয়েক। এদিকে আমেঠিতে স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ঘোষণা করেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই কেন্দ্র নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। প্রার্থী নির্বাচনে নাকি চমকও থাকছে। কী চমক? সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সূত্রের খবর, ‘পারিবারিক’ দুই কেন্দ্রে লড়তে রাজি নন গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্যই। রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী নাকি দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে সে কথা জানিয়েও দিয়েছেন।
আসলে কংগ্রেসের একসময়ের ‘দুর্গ’ এখন প্রহরীহীন। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে আমেঠিতে স্মৃতি ইরানির কাছে ৫৫ হাজার ভোটে হারেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। জল্পনা ছিল, এবার (Lok Sabha 2024) রাহুল ফিরতে পারেন আমেঠিতে। কিন্তু ওয়ানড় কেন্দ্র থেকে ইতিমধ্যেই প্রার্থী হিসাবে লড়েছেন রাহুল। জল্পনা ছিল, ওয়ানড়ের ভোট মিটতেই আমেঠির প্রার্থী হিসাবে রাহুলের নাম ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এখন শোনা যাছে, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি আর আমেঠি থেকে লড়তে চাইছেন না। তাঁর বক্তব্য, দুটি আসন থেকে জিতে এসে তার পর একটি আসন ছেড়ে দেওয়াটা জনমানসে ভালো বার্তা দেয় না। তাছাড়া আমেঠিতে ভোটে দাঁড়ালে তাঁকে ওই কেন্দ্রে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে গোটা দেশে প্রচারে সমস্যা হতে পারে।
অন্যদিকে, রায়বরেলিই উত্তরপ্রদেশের একমাত্র আসন যেখানে ২০১৯-এ জিতেছিল হাত শিবির। সেখানে সোনিয়া গান্ধী জয়ী হলেও এবার বয়সের কারণে প্রার্থী হবেন না তিনি। তিনি চলে গিয়েছেন রাজ্যসভায়। দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা, মায়ের ছেড়ে আসা আসনে প্রার্থী হতে পারেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। যদিও কংগ্রেস সূত্র বলছে, প্রিয়াঙ্কাও রায়বরেলি থেকে প্রার্থী হতে চাইছেন না। তাঁর যুক্তি, সোনিয়া গান্ধী ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায়। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তিনিও প্রার্থী হলে বা জিতে সংসদে গেলে কংগ্রেস থেকে গান্ধী পরিবারেরই তিনজন সাংসদ হয়ে যাবেন। ফলে বিজেপির পক্ষে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আঙুল তোলা সহজ হয়ে যাবে। প্রিয়াঙ্কাকে আরও একটা বিকল্প দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে বলা হয়েছিল, রাহুল যদি আমেঠি থেকে না লড়েন, তাহলে আমেঠিতে তাঁকে স্মৃতির বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হতে পারে। কিন্তু তাতেও রাজি নন প্রিয়াঙ্কা। এক্ষেত্রে তিনি বলহেন, স্মৃতি ইরানি ইতিমধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে প্রচার করছেন। তিনি লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন। স্মৃতির বিরুদ্ধে এখন ময়দানে নামলে হারার সম্ভাবনাই বেশি। আর প্রিয়াঙ্কা ভোট রাজনীতির শুরুটা হার দিয়ে করতে চান না।
সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি তাতে আমেঠি বা রায়বরেলি থেকে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্যই প্রার্থী হতে আগ্রহী নন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি হারের ভয়েই গান্ধী পরিবারের সদস্যরা পিছিয়ে আসছেন? শেষপর্যন্ত যদি গান্ধীদের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাই না থাকে তাহলে ওই দুই কেন্দ্রে আগে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হল না কেন? এতদিন ঝুলিয়ে রাখার অর্থ কী? এতদিন পর যদি শেষপর্যন্ত গান্ধীরা না লড়েন, তাহলে কি বিজেপিকে ওয়াকওভার দিয়ে দেওয়া হচ্ছে না? খাড়গে যে চমকের কথা বলছেন, সেই চমকটাই বা কোথায়?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.