প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি।
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বাংলার ভোট হিংসা ও রাজ্য সরকারের দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বুধবার বাংলার বুথস্তরের কর্মীদের সঙ্গে ভারচুয়ালি কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,” তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা করছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসের দিকে নির্বাচন কমিশন যেমন নজর রেখেছে তেমনি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও নজর রাখছে।” পাশাপাশি রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ ও আবাস দুর্নীতি নিয়ে সরব হন মোদি।
কর্মীদের কাছে তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের নীতির ফলে কেন্দ্রের প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে না বাংলার গরীব মানুষ। কেন্দ্রের সব প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে মোদি যে লড়াই শুরু করেছে, তা কার্যকর করার হবেই। পালটা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানান, “প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছেন শুনলে ঘোড়াতেও হাসবে। কারণ হিমন্ত বিশ্বশর্মা, শুভেন্দু অধিকারী, প্রফুল্ল প্যাটেল, অজিত পওয়ার, নারায়ণ রাণেদের দুর্নীতিগ্রস্ত বলেছিল বিজেপি। এজেন্সি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হলেই এই দুর্নীতিগ্রস্তরা যখন বিজেপিতে নাম লিখিয়ে সাধু হয়ে যান। যেন তাঁরা ধোঁয়া তুলসীপাতা। এর পরই শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে কুনাল ঘোষ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, “যদি দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে বলতেই হয়, তাহলে আগামী দিন প্রধানমন্ত্রী বাংলায় যত সভা করবেন সবকটি সভাতেই যেন সারদা ও নারদায় অভিযুক্ত, সিবিআইযের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী আপনার মঞ্চে না থাকে। যদি তা না হয় তাহলে ধরে নিতে হবে আপনি দুর্নীতিগ্রস্তদের নেতা।”
বৃহস্পতিবারই নির্বাচনী প্রচারে উত্তরবঙ্গে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে বুধবার বিভিন্ন জেলার বুথের কর্মীদের সঙ্গে ভোট প্রস্তুতি ও রাজ্যের মানুষের মতামত কি তা যাচাই করতে ভারচুয়ালি কথা বলেন। ‘আমার বুথ সবচেয়ে মজবুত’ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই এদিন বাংলার বুথ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বাংলার ভোট দিয়েই বক্তব্য শুরু করেন। জানান, বাংলার বিজেপি কর্মীদের পরিশ্রমের জন্যই মানুষ বিজেপির ওপর ভরসা করছে। কিন্তু প্রতিটা নির্বাচনে তৃণমূল হিংসা করে বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা করছে। আশা করছি, বুথস্তরের কর্মীরা যেভাবে ঘরে ঘরে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্প ও মোদির গ্যারান্টি নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন তাতে আমার বিশ্বাস এবার আরও বেশি আসনে বাংলায় জয় পাবে বিজেপি। মহিলা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মোদি জানতে চান তারা কি তৃণমূলের মহিলা কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন? যদিও জবাবে মহিলা কার্যকর্তারা জানান সেরকম কোন ঘটনা এখনও পর্যন্ত ঘটেনি।
এর পরই বাংলায় ভোট হিংসার প্রসঙ্গ টেনে মোদি জানান, “বাংলার ভোটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের দিন শাসক দলের সন্ত্রাস। তাই কমিশন ভোটের দিন যেমন সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে তেমনি বিজেপি নেতৃত্ব রাজ্যের উপর নজর রাখছে। এর পরই বাংলার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী।” এর পর ইন্ডিয়া জোট প্রসঙ্গ টেনে মোদি জানান, “দুর্নীতিগ্রস্ত ও পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি একটি জোট গঠন করেছে। এই দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবাবাদীদের বিরুদ্ধে মোদি যে লড়াই শুরু করেছে, তা জারি থাকবে। গত ১০ বছরে আপনারা যা দেখেছেন তা শুধু ট্রেলার মাত্র। আরও অনেক কিছু বাকি আছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.