সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঙ্গপালের হানায় কাঁপছে রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর ও মধ্যপ্রদেশ। একে দেশজুড়ে নিত্যদিন বাড়ছে করোনার কামড়, উপরন্তু দোসর পঙ্গপাল! করোনা আতঙ্কের মাঝেই উদ্বেগ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল পশ্চিম ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে পঙ্গপালের হানা। একাই ৩৫ হাজার মানুষের ১ বছরের খাবার নাকি নিমেষে খেয়ে ফেলতে পারে এই পঙ্গপালের ঝাঁক! নষ্ট হতে পারে ফসল। অতীত বলছে, পঙ্গপালের আক্রমণের পরই দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ। তাহলে কি এই অতিমারী ত্রাসের মাঝেই নেমে আসতে চলেছে দুর্ভিক্ষ? মাথায় হাত চাষিদের। অতঃপর পঙ্গপালের হানা এড়াতে মধ্যপ্রদেশের কৃষকরা তাই এখন বাসন বাজিয়ে চলেছেন।
মধ্যপ্রদেশের সেহোর জেলার বুধনি ও নসরুল্লাগঞ্জ এলাকার কৃষকরা পঙ্গপালের হানা থেকে বাঁচতে একনাগাড়ে বাসন বাজিয়ে চলেছেন। এর পাশাপাশি এলাকার গাছ, ফসলি ক্ষেতেও কীটনাশক ছড়িয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, বাজনা কিংবা জোরে জোরে বাসনপত্র বাজানোর আওয়াজে পঙ্গপালের দল যে ভয়ে দূরে সরে যেতে পারে, সম্প্রতি সংবাদসংস্থা এএনআইকে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞ জৈনেন্দ্র কানাউজিয়া। এছাড়াও এই ক্ষতিকারক পোকারা দূর হতে পারে বিশেষ ধরনের কীটনাশকে- যেমন, ক্লোরপিরাইফোস ২০ ইসি মেশানো জল ক্ষেতে ছড়িয়ে দিলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন রাজ্যে পঙ্গপাল যে হানা দিতে চলেছে তা নিয়ে গত সপ্তাহেই সতর্কবার্তা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক। ২০১৯ সালেও গুজরাতে এমনি পঙ্গপালের ঝাঁক হামলা চালিয়েছিল। যার জেরে ২৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছিল। কিন্তু তার থেকেও এ বারের হানা আরও বেশি উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা এবং একই সঙ্গে পঙ্গপালের হানা বড়সড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। নানা ধরনের রোগভোগ, এমনকী দেশ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতে পারে বলেও মনে করছেন তাঁরা।
দেশের গোবলয়গুলিকে ছুঁয়ে পঙ্গপালের দল উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ হয়ে মহারাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। সুদূর ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া-সহ আফ্রিকার বেশকিছু দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সৌদি আরব হয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এই পঙ্গপালের ঝাঁক। এরপর ভারতে প্রবেশ করেও ক্লান্ত নয় পঙ্গপালের দল। অনায়াসেই হামলা চালাতে পৌঁছচ্ছে একের পর এক রাজ্যে। হাওয়ার অভিমুখে ক্ষতি করছে একের পর এক ফসলি জমি। ফলে ক্রমেই আশঙ্কার কালো মেঘ ঘনাচ্ছে কৃষকদের মুখে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.