ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ এড়াতে দেশজুড়ে ২১ দিন লকডাউনের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লকডাউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৪ এপ্রিল, মঙ্গলবার। কিন্তু এদিন সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। যদিও ওড়িশা, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের সরকার ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়েছিল। কিন্তু তার থেকে আরও একধাপ এগিয়ে ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে মোদি সরকার। কিন্তু কেন? ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত না করে আরও ৩ দিন কেন লকডাউন বাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী?
প্রথমবার লকডাউন ঘোষণা হয়েছিল ২৫ মার্চ থেকে। পুরো তিন সপ্তাহ বা ২১ দিনব্যাপী লকডাউন ১৪ এপ্রিল রাতে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশজুড়ে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ফের বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র সরকার। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে আরও ২১ বা ১৪ দিনের লকডাউন করা যেত। কিন্তু তার বদলে ১৯ দিনের লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রী যখন লকডাউন বাড়ানো নিয়ে রাজ্য মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন, তখনও মনে করা হয়েছিল ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়বে লকডাউনের সময়সীমা। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদি ঘোষণা করেন ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে লকডাউন। সরকারি সূত্রে খবর, মে মাসের প্রথম তিন দিনই ছুটি। ১ মে দিনটি মে দিবস হিসেবে পালিত হয়। এরপর ২ মে পড়ছে শনিবার। ৩ মে রবিবার। তাই ৩ মে পর্যন্তই লকডাউন ঘোষণা করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
২৫ মার্চ, লকডাউন ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন সারা বিশ্বে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা। পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তখন তিনি বলেছিলেন, করোনা ভাইরাস প্রথম ৬৭ দিনে ১ লক্ষ জনকে সংক্রমিত করে। তারপরের ১১ দিনে ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ হয়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা। ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ হতে সময় লাগে ৪ দিন। করোনা ভাইরাস এভাবেই ছড়ায়। এই কারণেই চিন, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইটালি, ইরানের মতো দেশে যখন করোনা ছড়াতে শুরু করে তখন অবস্থা হাতের বাইরে চলে যায়। এই সব দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যাধুনিক। তা সত্ত্বেও করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি। তাদের অভিজ্ঞতাই বলছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে ঘরে থাকাই একমাত্র পথ। ভারতও তাই ২১ দিনের লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে দ্বিতীয় দফার লকডাউনে মিলেছে আশার ইঙ্গিত। মঙ্গলবার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০ এপ্রিলের পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কিছু ছাড় দেওয়া হতে পারে। তবে তা শর্তসাপেক্ষ হবে। জরুরিভিত্তিতে সংক্রমিত এলাকা থেকে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে বাইরে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হবে। এবার আগের থেকেও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। হটস্পটগুলিকে চিহ্নিত করে বিশেষ নজর দিতে হবে। গরীবদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপটি বেশি করে ব্যবহার করা ও মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন নমো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.