সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছেলে বা স্বামীর ফাঁসির আগে শেষবার তার সঙ্গে জেলে এসে দেখা করে যেতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সকালেই ফাঁসি কার্যকর হবে। এই মর্মে নির্ভয়া কাণ্ডের চার ধর্ষক-খুনি মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা ও পবন গুপ্তর বাড়িতে চিঠি পাঠাল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সূত্রে খবর, ফাঁসির দিন যত এগিয়ে আসছে তত নিজেদের গুটিয়ে রাখছে সাজাপ্রাপ্তরা। কমিয়ে দিয়েছে খাওয়াদাওয়া। তাদের শেষ ইচ্ছার কথাও জানতে চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার কোনও উত্তর দেয়নি তারা। এদিকে শুক্রবারই দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে তিহার জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন দোষীদের আইনজীবী এপি সিং। তাঁর অভিযোগ, জেল কর্তৃপক্ষ বিনয়, পবন ও অক্ষয়ের কেস ডায়েরি ও জরুরি কাগজ দিচ্ছে না। সেই কারণে তাঁর মক্কেলরা রায়ের পুনর্বিবেচনা প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতে পারছেন না।
নিয়মমতো ফাঁসির আগে দু’বার বাড়ির আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে পারে সাজাপ্রাপ্ত। জেল কর্তৃপক্ষ পরিবারকে সপ্তাহে দু’দিন করে দেখা করার সুযোগ দিয়েছে। এর আগে ২২ জানুয়ারি ফাঁসির দিন ঘোষণা করার পরেই বিনয় শর্মার বাবা জেলে গিয়ে দেখা করে এসেছিলেন। শুক্রবার তিহার জেলের পাঠানো চিঠি পেয়েই কান্নার রোল ওঠে মুকেশ, অক্ষয়, পবনদের বাড়িতে। আর যে কোনওভাবেই আইনি জটিলতাকে ঢাল করে নির্ভয়ার দোষীরা পার পাবে না সেটা আরও স্পষ্ট হল এই চিঠি পাঠানোর ঘটনায়। যদিও কারও পরিবারের তরফেই কেউ এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি। কবে কার বাবা-মা-স্ত্রী জেলে গিয়ে শেষ দেখা করে আসবে তা আপাতত জানা যায়নি। জেল সূত্রে খবর, চার অপরাধীর সেলের বাইরে অন্তত দু’জন করে রক্ষী সারাক্ষণ পাহারায় থাকছেন।
আগে ফাঁসির দিন ২২ জানুয়ারি ধার্য করার পরেই চার অপরাধীকে সমন পাঠিয়েছিল জেল কর্তৃপক্ষ। তবে সেই সমনে সাড়া দেয়নি কেউ। তাঁদের শেষ ইচ্ছের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তাদের উপার্জন করা অর্থ কার নামে দিয়ে যেতে চায়, সে কথাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কোনও কিছুরই উত্তর দেয়নি তারা। তিহারের এক বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজ চারজনের মেডিক্যাল পরীক্ষা হচ্ছে। এখনও শারীরিক ও মানসিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। আপাতত এখনও পর্যন্ত অক্ষয় ও পবনের তরফে কিউরেটিভ পিটিশন দায়ের করা হয়নি। নিয়মমতো প্রাণদণ্ডের সাজা পুনর্বিবেচনার আর্জি আদালত খারিজ করে দেওয়ার ১৪ দিন পর ফাঁসি হতে পারে। এর আগে বিনয়, মুকেশের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। শেষ মুহূর্তে পবনরা কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল করলে ফের ফাঁসির দিন পিছিয়ে যাবে কি না তা নিয়ে এখনও সংশয় আছে তিহার কর্তৃপক্ষের একাংশের। এদিকে এখনও পর্যন্ত নকল ফাঁসির তিনটি মহড়া চালিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.