সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজীব গান্ধী হত্যার মতোই ভয়াবহ ছক ছিল ধৃত বাম বুদ্ধিজীবীদের| মাওবাদীদের সঙ্গে ওই বুদ্ধিজীবীদের যোগাযোগ, অস্ত্র ও অর্থ জোগানে মদতের প্রমাণ রয়েছে। এমনটাই বিস্ফোরক অভিযোগ পুণে পুলিশের। তদন্তকারীদের আরও দাবি, ভারভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজদের বাড়িতে তল্লাশিতে যে সমস্ত চিঠিপত্র পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে ‘গ্রেনেড লঞ্চার’, ‘মোদিরাজ খতম’ করার মতো বয়ান মিলেছে।
[বাজল ভোটের দামামা, মধ্যপ্রদেশে লড়াই ‘বাহুবলী’ শিবরাজ ও ‘বল্লালদেব’ জ্যোতিরাদিত্যর]
এক সাংবাদিক বৈঠক করে একের পর এক যুক্তি খাড়া করেছেন মহারাষ্ট্র পুলিশের অতিরিক্ত মহানির্দেশক পরমবীর সিং। যদিও মারাঠিতে লেখা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার অনুবাদ জমা দিতে না পারায় দিল্লি হাই কোর্ট পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে। বাড়িতে নজর রাখার সময় পুলিশ শোয়ার ঘরের দরজা খুলে শুতে বলেছে বলে অভিযোগ করেন গৃহবন্দি গৌতম নওলাখার পার্টনার শাবা হুসেন। বাড়ির মধ্যেই এক মহিলা কনস্টেবল-সহ তিন পুলিশ কর্মী ক্রমাগত নজরদারি চালাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আইনজীবীর কথায় তাঁরা বাড়ির বাইরে যান। যদিও বাড়ির বাইরে বিরাট সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পরমবীর সিং জানান, “আমাদের কাছে হাজার, হাজার চিঠি ও নথি রয়েছে। এই বুদ্ধিজীবীরা কীভাবে গোপন আন্দোলনে মদত দিচ্ছেন, তা এই নথি থেকে স্পষ্ট। নির্বাচিত সরকার ফেলে দিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কীভাবে কাজে লাগানো হবে, রাজীব গান্ধীর মতো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ‘মোদিরাজ’ কীভাবে শেষ করতে হবে, মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বড় ঘটনার ছক কষা হয়েছে চিঠিতে।” গত জুনে ধৃত এক বুদ্ধিজীবীর লেখা বলে একটি চিঠি পড়ে শোনান তিনি। রোনা উইলসন নামে ওই ব্যক্তির সঙ্গে নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী) দলের শীর্ষ নেতা প্রকাশের যোগ ছিল বলে তিনি দাবি করেন। যেখানে গ্রেনেড লঞ্চার কেনার জন্য অর্থ জোগাড়ের কথা বলা হয়েছে। পরমবীর আরও জানিয়েছেন, বাজেয়াপ্ত হওয়া ডিস্ক থেকে রকেট লঞ্চার সংক্রান্ত একটি পুস্তিকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই পুলিশ কর্তার দাবি, মাওবাদী নেতৃত্বের সঙ্গে বুদ্ধিজীবীদের যোগের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরই তাঁরা বিভিন্ন শহরে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। পরমবীর বলেন, “বিভিন্ন নথি প্রমাণ খতিয়ে দেখে আমরা নিশ্চিত হয়ে সাতটি জায়গায় তল্লাশি চালাই। পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।” তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওঁদের গৃহবন্দি রাখা হয়েছে। পরমবীরের দাবি, ভারভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, ভের্নন গঞ্জালভেজ, গৌতম নওলাখা ও অরুণ ফেরেরাদের উপর সপ্তাহ খানেক নজর রাখা হয়েছিল। নতুন তথ্যপ্রমাণের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসকে জানানো হয়। তারপর তাঁদের গ্রেপ্তারির সিদ্ধান্ত নেয় পুণে পুলিশ।
তিনি জানান, ভীমা-কোরেগাঁও কাণ্ডে এ বছরের জুনে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রোনা উইলসন। তিনি ‘কবীর কলা মঞ্চ’-এর সদস্য। আবার সোমবার যাঁদের ধরা হয়েছে, তারাও সকলে এই মঞ্চের সদস্য। এডিজির দাবি, গত বছরের ৩০ জুন এই রোনা উইলসনের সঙ্গে মাও নেতা সুরেন্দ্র গ্যাডলিং ওরফে প্রকাশের কথোপকথনের একটি সূত্র পায় পুলিশ। ওই কথোপকথন ‘প্রটেক্টেড’ বা সুরক্ষিত হলেও পুলিশ পাসওয়ার্ড উদ্ধার করে। সেই সূত্রেই ইঙ্গিত মেলে, নাশকতা ঘটিয়ে সরকার ফেলে দিতে চায় মাওবাদীরা।
[ফের সন্ত্রাস ভূস্বর্গে, ৫ পুলিশকর্মীর পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করল জঙ্গিরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.