Advertisement
Advertisement

সিমি সদস্যদের গুলি লেগেছিল কোমরের উপর

ভুয়া এনকাউণ্টারের সিবিআই তদন্ত চেয়ে সোচ্চার আইনজীবী পারভেজ আলম৷

Lawyer wants CBI probe for encounter of SIMI men
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 3, 2016 8:43 am
  • Updated:November 3, 2016 8:43 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:মধ্যপ্রদেশে এনকাউণ্টারে নিহত আট সিমি সদস্যের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল কড়া পুলিশি নিরাপত্তায়৷ ময়নাতদন্তের পর সিমি সদস্যদের দেহ তুলে দেওয়া হয় তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে৷ বুধবার নিহত সাত সিমি সদস্যকে কবর দেওয়া হয় মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের নিজেদের বাড়ির কাছাকাছি৷ আরেক সদস্যকে এদিন কড়া পুলিশ পাহারায় কবর দেওয়া হয় আমেদাবাদে৷

বুধবারও ভুয়া সংঘর্ষের অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ ঘিরে সরগরম ছিল রাজ্য রাজনীতি৷ ভুয়া এনকাউণ্টারের ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে সোচ্চার হয়েছেন আইনজীবী পারভেজ আলম৷ অন্যদিকে, তাঁর অভিযোগ নস্যাৎ করে ভুয়া এনকাউণ্টারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ কর্তা যোগেশ চৌধুরি৷ মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের আইনজীবী পারভেজ আলমের অভিযোগ, “এনকাউণ্টারের নামে জেল পালানো সিমি কর্মীদের কোমরের উপরে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি করেছিল পুলিশ৷ বুকে, পেটে, মাথায় বেশ কয়েকটা বুলেট লেগে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় স্টুডেণ্টস ইসলামিক মুভমেণ্ট অফ ইন্ডিয়ার (সিমি) আট জন সদস্য৷”

Advertisement

তাঁর দাবি, নিহতদের একজনেরও পিঠে গুলি লাগেনি৷ সিমির সদস্যরা যদি পালাবেই এবং পুলিশ তাদের তাড়া করবে তাহলে একজনেরও অন্তত পিঠে গুলি লাগা উচিত ছিল৷ কিন্তু তা হয়নি৷ আর সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, জেল পালানো আসামি যতই বিপজ্জনক হোক না কেন তাদের কোমরের নিচে গুলি করে জখম করা যেতে পারে৷ তাদের গ্রেফতার নিশ্চিত করতে শেষ অস্ত্র হিসাবে পুলিশ কোমরের নিচে গুলি করতে পারে৷ কিন্তু জেল পালানো আসামিদের খুন করার অধিকার পুলিশকে কেউ দেয়নি৷

আলমের অভিযোগ, “ভোপাল সেণ্ট্রাল জেলে এখনও ২০ জন সিমি সদস্য বন্দি রয়েছে৷ তাদের উপর শারীরিক অত্যাচার করছে পুলিশ৷ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছে৷ তাদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর এবং আদালতে শারীরিকভাবে উপস্থিত করানোর আবেদন জানিয়ে ভোপালের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়েছি৷ শুধু তাই নয়, ফেক এনকাউণ্টারের অভিযোগ তুলে আমি সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি৷ তাই আমারও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে৷ নিজের নিরাপত্তার জন্য এবং জেলবন্দি সিমি কর্মীদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ডিজির সঙ্গে দেখা করেছি৷”

আলমের সাফ কথা, “পুলিশ ভুয়া সংঘর্ষের মাধ্যমে আমার মক্কেলদের (সিমি কর্মীদের) মেরে ফেলেছে৷ আমি যেহেতু ভুয়া সংঘর্ষের বিরুদ্ধে সরর হয়েছি তাই আমারও প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে৷ তাছাড়া ভুয়া সংঘর্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য ও অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷”

আলমের দাবি, ভারী চেহারার আট সিমি কর্মী কেউই পেশাদার অ্যাথলিট ছিল না৷ তাহলে তারা শুধু বিছানার চাদর পেঁচিয়ে ৩২ ফুট উঁচু পাচিল টপকাল কী করে? তারা জেলের তালা ও গরাদ ভেঙে পালানোর সময় ধোপদুরস্ত পোশাক, টি শার্ট, নতুন জিনসের প্যাণ্ট, স্পোর্টস শু গুলোই বা পেল কোথা থেকে? তাদের হাতে দেশি বন্দুক ও অস্ত্র তুলে দিল কারা? এসব প্রশ্নের উত্তর চান নিহতদের পরিবারের সদস্যরা৷ এজন্য আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি থেকে পিছু হটব না৷

এদিন রাজ্য পুলিশের আইজি যোগেশ চৌধুরি বলেন, এনকাউণ্টার নিয়ে এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক দল অন্যায়ভাবে অকারণে প্রশ্ন তুলছে৷ অপরাধীদের পালানোর ও তাদের হত্যা করার মধ্যে সাত ঘণ্টার ব্যবধান ছিল৷ সিমি কর্মীরা জেল ভেঙে পালানোর জন্য দেওয়ালির রাতকেই বু্দ্ধি করে বেছে নেয়৷ শব্দবাজির তীব্র আওয়াজের মধ্যেই পালানোর ছক কষে৷  ধারাল তালা ও চামচকেই তারা অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে৷ বাধা দিতে এলে জেলরক্ষী হেড কনস্টেবল রামশঙ্কর যাদবকে গলা কেটে খুন করে৷ ওই অপরাধীরা এর আগেও দু’ বছরে তিন বার জেল ভেঙে পালিয়েছিল৷ তাই সোমবারের ঘটনার পর পুলিশ আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি৷ এনকাউণ্টার করতে বাধ্য হয়েছিল৷

এই অবস্থায় ফেক অনকাউণ্টারের অভিযোগ তুলে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি, আরজেডি, আম আদমি পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, জেডিইউ, আরএলডি-সহ একাধিক দল৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement