সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্রের সমস্ত স্কুলে মারাঠি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করতে আইন সংশোধন করবে ফড়ণবিস সরকার। সম্প্রতি বিধানসভার অধিবেশনে এই কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস।বলেন,”মহারাষ্ট্রের সমস্ত বোর্ডের স্কুলগুলিতে মারাঠি ভাষা বাধ্যতামূলক করতে আইন সংশোধন করা হবে৷ বর্তমান আইনটিকে আরও শক্তিশালী করা হবে, যাতে মারাঠি বাধ্যতামূলক করা যায়। যারা মহারাষ্ট্র থাকবেন ও এখানে পড়াশোনা করবেন, তাদের প্রত্যেককেই মারাঠি জানতে হবে। কোনও বোর্ডই পাশ কাটিয়ে বেরোতে পারবে না। যে সিবিএসসি বা আইসিএসই স্কুলগুলি রাজ্যের আইন লঙ্ঘন করে মারাঠি শেখাচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মারাঠি ভাষা বাধ্যতামূলক করা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই সরগরম মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। এর মাঝে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন শিব সেনার বিধায়ক নীলম গোরে। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে থাকা বিশ্বমানের ইংরেজি স্কুলগুলি প্রশাসনের নির্দেশ মেনে মারাঠিকে বাধ্যতামূলক করতে চাইছে না। বিষয়টি মেনে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফড়ণবিস বলেন, “আমিও আমার অফিসারদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে অনেক স্কুল নির্দেশ মানছে না। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে বর্তমান আইনটি সংশোধিত হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
দ্বিতীয়বার সরকার গড়ার পরেই জাতীয় শিক্ষানীতির পরিবর্তন করে হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা নেয় বিজেপি। কিন্তু, এই বিষয়ে তৈরি হওয়া খসড়া প্রস্তাবটি সামনে আসার পরে শুরু হয় বির্তক। প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে দক্ষিণের রাজ্যগুলি, বিশেষত তামিলনাডু৷ তীব্র প্রতিবাদ জানান ডিএমকে সুপ্রিমো এমকে স্ট্যালিন। হিন্দিভাষার আধিপত্য যে তামিলনাড়ুর মানুষ মেনে নেবেন না তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন। বলেন, “আমি বিজেপিকে সতর্ক করছি, এই নীতি চালু করলে বড় বিপদের সম্মুখীন হবে তারা।” এমডিএমকে নেতা ভাইকো হুমকির সুরে বলেন, “ভাষাযুদ্ধ শুরু হবে।”
জোট শরিক এআইএডিএমকে জানিয়েছিল, এই শিক্ষানীতি মানবে না তারা। তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী কে এ সেঙ্গোত্তাইয়ান বলেছিলেন, “তামিলনাড়ু কেবল দ্বি-ভাষা নীতি মেনে চলবে। তামিল ও ইংরেজি ভাষা শেখানো হবে এখানে।”
এরপরই সিদ্ধান্ত বলবৎ করা থেকে পিছু হঠে কেন্দ্র। সংশোধিত হয় জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া প্রস্তাবটি। জানানো হয়, ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণিতে তিনটি ভাষার মধ্যে পড়ুয়ারা নিজেদের ইচ্ছেমতো এক বা একাধিক ভাষা পরিবর্তন করতে পারে। তিনটে ভাষাতেই তাদের দক্ষতা যাতে প্রকাশ পায়, তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এবার মহারাষ্ট্রও নিজের রাজ্যে মারাঠি বাধ্যতামূলক করার পথে হাঁটছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.