Advertisement
Advertisement
লালুপ্রসাদের বাড়ি বধূনির্যাতন

খেতে দিতেন না শাশুড়ি, বধূ নির্যাতনের বিস্ফোরক অভিযোগ লালুর পুত্রবধূর

শাশুড়ির সামনেই চাকরেরা অত্যাচার করতেন, অভিযোগ তেজপ্রতাপের স্ত্রীর।

Lalu Prasad’s daughter-in-law accuses family of ill treatment
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:September 30, 2019 4:47 pm
  • Updated:September 30, 2019 4:47 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যাদব পরিবারের অন্তঃপুরে বধূ নির্যাতন। অভিযোগের তির সরাসরি বিহারের প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী ও তাঁর বড় মেয়ে আরজেডির রাজ‌্যসভার সাংসদ মিশা ভারতীর দিকে। শাশুড়ি-ননদের অত‌্যাচারে, পরিচারকের তাড়া খেয়ে শেষ পর্যন্ত বাপের বাড়ি ফিরে এলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী তথা আরজেডির সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের বউমা ঐশ্বর্য। রাজ্যে প্রশাসক হিসাবে ও মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে সওয়াল করতে যাঁদের দেখা যায় তাঁদের বাড়িতেই বধূ নির্যাতন!

[আরও পড়ুন: আরবিআইয়ের লভ্যাংশ থেকে আরও ৩০ হাজার কোটি টাকা চাইতে পারে কেন্দ্র!]

লালুর বড় ছেলে তেজপ্রতাপের স্ত্রী ঐশ্বর্য রায়ের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে কেউ তাঁকে খেতে দিত না। রান্নাঘরে ঢোকার অধিকার ছিল না। সেখানে চাবি দিয়ে রেখে দেয় শাশুড়ি রাবড়ি দেবীর খাস চাকর। তাঁর উপর অত‌্যাচারের দৃশ‌্য মোবাইলে রেকর্ড করতে গেলে ওই ভৃত‌্য তাঁকে তাড়া করে মোবাইলটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। রোজ চোখের জলে শ্বশুরবাড়িতে দিন কাটত। খিদে সহ‌্য করে নিতেন কিন্তু রোজ ননদ-শাশুড়ির গঞ্জনা, মানসিক অত‌্যাচার আর সহ‌্য করতে পারছিলেন না।

Advertisement


লালুপ্রসাদের বাড়ির লোকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের ভুরি ভুরি অভিযোগ এবার মিডিয়ার সামনে কাঁদতে কাঁদতে শেয়ার করলেন ঐশ্বর্য। তাঁর কথায়, “গত তিন মাস ধরে আমার উপর অকথ‌্য অত‌্যাচার করা হয়েছে। ওই বাড়িতে কেউ খেতে দিত না। শেষে আমার বাড়ি থেকে খাবার পৌঁছে দেওয়া হত। সম্প্রতি রান্নাঘরে চাবি দিয়ে আমার শাশুড়ির এক চাকর খুব খারাপভাবে জানায়, ওই ঘরে ঢুকতে আমাকে নিষেধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ওই চাকর তাঁর মোবাইল কেড়ে নিতে গেলে তার হাত থেকে বাঁচতে ছুটতে ছুটতে বাড়ির বাইরে এসে বিহারে মহিলাদের উপর অত‌্যাচার রুখতে তৈরি হেল্পলাইন ‘প্রমীলা’য় ফোন করে অভিযোগ জানান ঐশ্বর্য।


দ্রুত সেই বাহিনীর সদস‌্যরা এসে হাজির হন লালুর বাড়িতে। তাঁদের সামনেই ঐশ্বর্য দাবি করেন, যখন ওই ভৃত‌্য তাঁকে তাড়া করে সেই সময় গোটা দৃশ‌্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী, তাঁর বড় মেয়ে তথা বিহার রাজ‌্যসভার সাংসদ মিশা ভারতী ও তাঁর ছোট ছেলে তথা বিহার বিধানসভার বিরোধী নেতা তেজস্বী যাদব। বাপের বাড়িতে বসে সাংবাদিকদের ঐশ্বর্য আরও বলেন, “আমার শাশুড়ি তাঁর কর্তব‌্য পালন করতেন না। আর মিশা নিজের শ্বশুরবাড়িতে না থেকে বাপের বাড়িতে থাকত। যাদব পরিবারের সব ক্ষমতা নিজের হাতে রাখেন। তাই এত ঝামেলা।”

[আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধি রুখতে নয়া পদক্ষেপ, বন্ধ করা হল পিঁয়াজের রপ্তানি]

গত বছরই ঐশ্বর্যর সঙ্গে বিয়ে হয় তেজপ্রতাপের। বিয়ের ছ’মাসের মধ্যেই ঐশ্বর্যর বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন তেজ। এরপরও দাম্পত‌্য সম্পর্ক পুনরায় ঠিক করতে শ্বশুরবাড়িতেই রয়ে গিয়েছিলেন আরজেডির আর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা চন্দ্রিকা রায়ের কন‌্যা ঐশ্বর্য। বিহারের প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী দারোগা প্রসাদ রাইয়ের নাতনিও তিনি। ঐশ্বর্য বলেন, “তেজের সঙ্গে আমার সম্পর্ক যাতে ভাল থাকে সেটাই আমি চেয়েছিলাম। তাই আমার স্বামী ডিভোর্সের মামলা দায়ের করার পরও সেখানে থেকে যাই। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এমন আচরণ করতে থাকে যেন আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েই গিয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, তাঁর প্রতি তেজের মনোভাব বিষিয়ে তুলেছিলেন ননদ মিশা। দুই ভাই তেজ ও তেজস্বীর মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরির জন‌্যও মিশাকেই দায়ী করেছেন ঐশ্বর্য। দেওর তেজস্বী অনেকদিন তাঁর সঙ্গে ভাল ব‌্যবহার করলেও যেদিন তাঁকে চাকরটি তাড়া করে সেদিন সব দেখেও কেন চুপ ছিলেন তা এখনও রহস‌্যময় তাঁর কাছে। পশু খাদ‌্য কেলেঙ্কারিতে দোষী লালুপ্রসাদ যাদব বর্তমাসে জেল বন্দি। ঐশ্বর্যর বাবা চন্দ্রিকার আক্ষেপ, “দু’সপ্তাহ আগে মেয়ে বাপের বাড়ি চলে আসার পর লালুজির বাড়ির কোনও সদস‌্যই আমার ফোন ধরছেন না। ওঁরা এমন আচরণ করবে জানলে এবং এই বিয়ের এমন লজ্জাজনক পরিণতি হবে জানলে কখনওই বিয়ে দিতাম না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement