সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমির খান অভিনীত ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর বাস্তবের ‘ব়্যাঞ্চো’কে নিশ্চয়ই মনে আছে? আজ্ঞে, লাদাখের সোনম ওয়াংচুকের কথাই হচ্ছে। যিনি কিনা ম্যাগসেসাই পুরস্কার পেয়েছেন সম্প্রতি। সেই লাদাখের মতো নির্জন উপত্যকার সেই শিক্ষক তথা সমাজসেবীই এবার ভারত সীমান্তে চিনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। বললেন, “চিনকে জবাব দিন, চিনের ভাষাতেই। এবার শুধু সীমান্তের জওয়ানরাই নন, চিনকে জবাব দেবেন প্রত্যেক ভারতবাসী।”
করোনা আবহে লকডাউনের জেরে যখন গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ধুঁকছে, তখন সেই প্রেক্ষাপটকেই কাজে লাগিয়েছে সুযোগ সন্ধানী চিন। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় জবরদস্ত ক্ষমতা কায়েম করার জন্য একের পর এক কোম্পানির শেয়ার কিনে চলেছে তারা। অভিসন্ধি, মুনাফা লোটা! এর মাঝেই ভারত সীমান্তে চিনা সেনার আগ্রাসী সমরসজ্জায় অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। প্যাংগং আর গালওয়ান উপত্যকায় অতিরিক্ত দু’ থেকে আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চিন। দ্রুত সংঘাতের আবহ না কাটলে চিন ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ একপ্রকার আসন্ন বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই চিনা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ‘ব়্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক।
ওয়াংচুকের কথায়, ভারতে যদি চিনের সামগ্রী কেনা-বেচা বন্ধ হয়, তাহলে কিছুটা হলেও এতে ওদের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। ফলস্বরূপ, চিন ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে। “সীমান্তে যখন গোলাগুলি হয়, আমরা নিজেদের বাড়িতে আরামে ঘুমোই। ভাবি, শত্রুপক্ষকে জবাব দেওয়ার জন্য তো জওয়ানরা রয়েইছেন। কিন্তু এবার চিনকে সাঁড়াশি চাপের মুখে ফেলতে হবে। সীমান্তের পাশাপাশি অর্থনীতির দিক দিয়েও। আমরা প্রত্যেক বছর ৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিময়ে চিনা দ্রব্য আমদানি করি। আর সেই টাকাতেই ওরা নিজেদের অর্থনীতি চাঙ্গা করছে। চিনের সবথেকে বড় ভয় ওদের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো যেন ভেঙে না পড়ে! আর সেরকম হলে চিনাদের রাগ আরও বেড়ে যাবে সরকারের প্রতি। সে দেশের জনতা বিদ্রোহী হয়ে উঠবে। এটাই ওদের মূল ভয়। তাই সবার আগে ওদের অর্থনীতিতেই মোক্ষম ঘা দেওয়া প্রয়োজন”, মন্তব্য সোনমের।
চিনা দ্রব্য বর্জন করার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সোনম এও বলেছেন যে, “চিনের তৈরি যত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ আছে, সেগুলোও ব্যবহার করা বন্ধ করুন। পরিবর্তে দেশীয় জিনিস কিনুন, এতে ভারতের বেকারত্ব ঘুচবে। দেশের অর্থনীতিও ঠিক থাকবে।”
কেন চিনের এমন ষড়যন্ত্র? এপ্রসঙ্গে ‘ব়্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক জানিয়েছেন, “চিন বর্তমানে নিজের দেশের নাগরিকদেরই ভয় পাচ্ছে। ১৪০ কোটির দেশ, যেখানকার নাগরিকরা কোনওরকম মানব অধিকার ছাড়াই মজুরের মতো স্বৈরাচারি সরকারের জন্য কাজ করে চলেছে। চিনের প্রায় ২০ শতাংশ লোক লকডাউনের জেরে বেকার হয়ে পড়েছে। জনতারা ভিতর ভিতর ফুঁসছে চিন সরকারের বিরুদ্ধে। সেই ইস্যুটি থেকে নজর সরাতেই প্রতিবেশী দেশগুলিকে অনবরত আক্রমণের ছক কষছে চিন। শুধু ভারতই নয়, চিনের এধরনের ষড়যন্ত্রের শিকার ভিয়েতনাম, তাইওয়ানও।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.