ফাইল ছবি।
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) বিধানসভা নির্বাচনে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র ভূমিকা নিতে চলেছেন দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকরা (Farmers Protest)। ২০২০-র নভেম্বরে আন্দোলন শুরুর দিন থেকেই নিজেদের ‘অরাজনৈতিক’ ভাবমূর্তি বজায় রাখার চেষ্টা পুরোদমে চালিয়ে গিয়েছেন কৃষকরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা তাঁদের সমর্থন জানাতে এসেছেন। কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে কিছুতেই আন্দোলন মঞ্চে ঠাঁই পায়নি কোনও দলের পতাকা বা প্রতীক। দীর্ঘ আন্দোলনে দেশবাসীর সমর্থন মিলেছে বলেই কেন্দ্রের উপর চাপ বজায় রাখা গিয়েছে বলেই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন আন্দোলনকারী কৃষকরা।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য নির্বাচনে জনসভা করে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন করা হলেও, কোন দলকে ভোট দেওয়া উচিত, সেই সংক্রান্ত কোনও মন্তব্যও করেননি কৃষকনেতারা। এবার উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনেও সেই একই ছকে এগোতে চাইছেন তাঁরা। সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে বড় ভূমিকা নেবেন গত এক বছর রাস্তায় বসে থাকা কৃষকরা।
একটি মহল থেকে দাবি উঠছিল, উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নিন কৃষক আন্দোলনকারীরা। কারণ উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকরা এই আন্দোলনের অন্যতম বড় শরিক। তবে সংযুক্ত কিষান মোর্চার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই নিজেদের অরাজনৈতিক তকমার সঙ্গে আপস করা হবে না। সাংবিধানিক অধিকার কাজে লাগিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে, তা হবে তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। তবে সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি আর আন্দোলনের অংশ হিসাবে থাকতে পারবেন না।
তার মানে কিন্তু নির্বাচনে মোটেই চুপচাপ বসে থাকবেন না কৃষক আন্দোলনকারীরা। বিজেপি বিরোধী প্রচার চলবে অবিরত। কখনও জনসভা করে, কখনও আবার গ্রামে গ্রামে ফিসফিস করে চলবে, ‘কালা কানুন’ নিয়ে এসে কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সর্বনাশ করতে চেয়েছে বিজেপি, আউড়ে যাওয়া হবে সেই বুলি। যার পোশাকি নাম ‘হুইস্পার ক্যাম্পেনিং’।
তবে ঠিক কোনপথে হবে বিজেপি বিরোধী প্রচার, তা এখনই চূড়ান্ত করা হয়নি। অপেক্ষা করা হচ্ছে নির্বাচনী বিধি কার্যকর হওয়ার। গোটা প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে সংযুক্ত কিষান মোর্চার অন্যতম প্রধান শরিক ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (বিকেইউ) নেতা রাকেশ টিকাইত জানিয়েছেন, “আমাদের থেকে জনগণ অনেক বেশি বুদ্ধিমান। ওঁরা সঠিক ব্যক্তি ও দলকে ঠিক বেছে নেবেন। তবে বিজেপি যদি ভাবে আইন প্রত্যাহার করে নিলেই কৃষক ও তাদের পরিবার ওদের অন্যায়, দাদাগিরি ভুলে যাবে, তাহলে বলব ওরা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে। ৭০০-র বেশি শহিদের বলিদান বৃথা যাবে না।”
সেই সঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, “আমাদের আন্দোলন, আত্মত্যাগ ও কোনওভাবে কৃষি আইন লাগু হয়ে গেলে তার পরিণাম কী হতে পারত, সেই কথা মানুষের মন থেকে আমরা মুছে যেতে দেব না। আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা অনেক কথাই তো ভুলে যাই, কখনও আবার ক্ষমাও করে দিই। কিন্তু দেশের অন্নদাতাদের যে ক্ষতি বিজেপি করেছে, তা ভুলতে দেওয়া চলবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.