সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে অশান্তি চলছিল। শ্রদ্ধার বন্ধুরাও জানায়, প্রেমিকাকে মারধর করত আফতাব। প্রতিবেশীরা শ্রদ্ধার চিৎকার শুনেছেন। ১৮ মে হত্যার রাতে সংসার খরচ কে চালাবে, এই নিয়েই অশান্ত হয়। বুধবার আফতাবকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। আরও জানা গিয়েছে, খুনের ঘটনার ১০ দিন আগে দিল্লিতে আসেন শ্রদ্ধা-আফতাব। প্রশ্ন উঠছে, হত্যার জন্যেই কি শ্রদ্ধাকে মুম্বই থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসে আফতাব?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ মে রাতে সংসারে বেশ কিছু জিনিসপত্র কেনা নিয়ে শ্রদ্ধা ((Shraddha Walkar) ও আফতাবের (Aftab Amin Poonawala) মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। তুমুল বচসায় সংসারের খরচ কে টানবে সেই প্রসঙ্গ ওঠে। বচসা থেকে মারপিট হয়। তদন্তকারীদের বক্তব্য, এর পরই শ্রদ্ধার বুকের উপর চেপে বসে আফতাব। গলা টিপে খুন করে তাঁকে। তদন্তের শুরুতে জানা গিয়েছিল, লিভ-ইন পার্টনারকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়ায় খুন হতে হয় শ্রদ্ধাকে। কিন্তু কেবল সেটুকু কারণ নয়, এখন এমনটাই মনে করছে পুলিশ।
শ্রদ্ধাকে খুনের নেপথ্যে এক মহিলার সঙ্গে আফতাবের ঘনিষ্ঠতাও কারণ হতে পারে। যে সম্পর্কে বাধা দিচ্ছিলেন শ্রদ্ধা। ফলে পথের কাঁটা দূর করে আফতাব! শ্রদ্ধাকে যে প্রায়ই মারধর করা হত, সেই দাবি উঠেছে। একথা যেমন তরুণীর বান্ধবীরা জানিয়েছেন, তেমনই দিল্লির ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীদেরও বক্তব্য, মাঝমাঝে বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে শ্রদ্ধার চিৎকার শোনা যেত। পুলিশের দাবি, শ্রদ্ধা খুনে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ইনস্টাগ্রামে ভুয়ো চ্যাট করে আফতাব। এইসঙ্গে ব্যাংকে অর্থ জমা করে এমন কায়দায় যাতে মনে হয়, শ্রদ্ধা ও সে অনেক দিন থেকে আলাদা থাকছে।
এদিকে জেরায় আফতাব জানিয়েছে, যেদিন সে শ্রদ্ধাকে খুন করে তার অন্তত ১০ দিন আগে খুনের ছক কষেছিল। কিন্তু একে অপরের প্রতি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে তারা। তাই সেদিন আর প্রেমিকাকে খুন করে উঠতে পারেনি আফতাব। ৮ মে আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। সে দিনই প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করবে বলে ঠিক করেছিল আফতাব। কিন্তু ঝগড়ার মধ্যেই শ্রদ্ধা হঠাৎ কাঁদতে শুরু করেন। পুলিশের কাছে আফতাব দাবি করেছে, প্রেমিকাকে কাঁদতে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে সে। সেদিনের মতো খুনের পরিকল্পনা বাতিল করে।
প্রসঙ্গত, ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকারকে খুন করে তাঁর প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। খুনের পর দেহের ৩৫টি টুকরো করে আফতাব। এরপর দিল্লি শহরের বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলতে থাকে। আফতাবকে ভালবেসে পরিবার, চাকরি, শহর ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিল তরুণী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.