Advertisement
Advertisement

Breaking News

দিল্লিতে পাকড়াও ভিন্দ্রানওয়ালের অনুগামী কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গি

হিন্দ সমাচার পত্রিকার সম্পাদক রমেশ চন্দ্রকে গুলি করে খুন করেছিল গুরসেবক।

Khalistani militant held in Delhi
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 14, 2019 9:34 am
  • Updated:March 14, 2019 9:34 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গি নেতা গুরসেবক সিংকে পাকড়াও করল দিল্লি পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া আগাম খবরের ভিত্তিতে বুধবার রীতিমতো নজরদারি চালিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার অতিরিক্ত কমিশনার অজিত কুমার সিংলা জানিয়েছেন, ৫০টিরও বেশি সন্ত্রাসবাদী হামলায় জড়িত গুরসেবক। প্রচুর পুলিশ অফিসারকে খুন করেছে সে। খুন করেছে পুলিশের ইনফর্মারদেরও। বেশ কয়েকটি ব্যাংকে ডাকাতি, থানায় হামলার ঘটনায় জড়িত সে। পাঞ্জাব পুলিশের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল ৫৩ বছরের গুরসেবক। ২৬ বছর ধরে জেলে ছিল গুরসেবক। অনেক পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে তার। নিয়মতভাবে সে যোগাযোগ রাখত পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের অফিসারদের সঙ্গে। খলিস্তান কমান্ডো ফোর্স (কেসিএফ)-এর নেতা গুরসেবক নতুন করে পাঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চাঙ্গা করার চেষ্টা করছিল। এজন্য সে খলিস্তানিদের নিয়ে নেটওয়ার্ক তৈরির চেষ্টায় ছিল। কেসিএফের প্রধান তথা সভাপতি হল পরমজিৎ সিং পাঞ্জোয়ার। সে এখন আইএসআইয়ের ছত্রছায়ায় রয়েছে লাহোরে। সেখানে তার বিরাট অফিস ও বাসস্থান। পরমজিতের নির্দেশেই নতুন করে খলিস্তানি আন্দোলন সক্রিয় করার চেষ্টা করছিল গুরসেবক।

Advertisement

গুরসেবকের প্রধান পরিচয় সে হল অপারেশন ব্লু স্টার খ্যাত সন্ত্রাসবাদী নেতা জার্নেল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের ঘনিষ্ঠ অনুগামী। বলা যেতে পারে ভিন্দ্রানওয়ালে ছিল তখনকার ‘মাসুদ আজহার’। অমৃতসর স্বর্ণমন্দির কব্জা করে নিয়েছিল ভিন্দ্রানওয়ালে ও তার কয়েকশো অনুগামী। ১৯৮৪ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে ভারতীয় সেনাবাহিনী স্বর্ণমন্দিরকে জঙ্গিমুক্ত করতে শুরু করে অপারেশন ব্লু স্টার। লাগাতার গুলিযুদ্ধের পর অভিযানে নিহত হয় বহু খলিস্তানি জঙ্গি এবং তাদের নেতা ভিন্দ্রানওয়ালে। এই অভিযানের জেরে পাঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী খলিস্তানি আন্দোলনের মাজা ভেঙে যায়। বহু খলিস্তানি জঙ্গি নেতা ও সন্ত্রাসবাদী পাকিস্তানে পালিয়ে যায় ও তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের নির্দেশে পাক সেনার কাছে নিরাপদ আশ্রয় পায়। পাকিস্তান থেকে পাঞ্জাবে অনুপ্রবেশ করে তারা ফের জোট বেঁধে সক্রিয় হয়। তখন খলিস্তানি নেতা মনবীর সিং চেহদুর নেতৃত্বে নাশকতা শুরু করে গুরসেবক।

খলিস্তানের সমালোচক হিন্দ সমাচার পত্রিকার সম্পাদক রমেশ চন্দ্রকে গুলি করে খুন করেছিল গুরসেবক। লুধিয়ানার রাইকোটের বাসিন্দা গুরসেবকের দাদা স্বর্ণ সিং, ভাই এবং দুই বন্ধুও ১৯৮২ সালে ভিন্দ্রানওয়ালের নেতৃত্বে খলিস্তানি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। তারা প্রত্যেকেই নানা সময়ে সেনা বা পুলিশের গুলিতে খতম হয়েছিল। গুরসেবক তিহার জেলে বন্দি খলিস্তানি জঙ্গি নেতা জগজিৎ সিং হাওয়ারা এবং অন্য জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগঠনকে নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করছিল। এই খবর পেয়ে ফাঁদ পাতে দিল্লি পুলিশ। একাধিক চরকে খলিস্তানি ইনফর্মার সাজিয়ে সক্রিয় করা হয়। এরপরই নজরে আসে গুরসেবকের হদিশ। ছবি ও তথ্য মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই গুরসেবককে জনবহুল জায়গায় দেখা করে অস্ত্র সরবরাহের টোপ দেওয়া হয়। ফাঁদে পা দিতেই তাকে গ্রেপ্তর করে সাদা পোশাকের পুলিশ।

১৮ বছর জেল খাটার পর ২০০৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল সে। কিন্তু নানা নাশকতা ও খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় ২০১৭ সালে তার নামে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। এরপর থেকেই সে পলাতক ছিল।
এই অবস্থায় কর্তারপুর করিডরে শিখ তীর্থযাত্রীদের সুবিধাপ্রদান নিয়ে বৃহস্পতিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারতীয় ও পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রকের অফিসাররা। শিখ তীর্থযাত্রীদের ন্যায্য সুবিধা থেকে পাকিস্তান যেন বঞ্চিত না করে সেই মতো দাবি ও অনুরোধ পেশ করবে ভারত। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হবে, খলিস্তানি আন্দোলনের জন্য মাইকে ও লিফলেট বিলিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে কর্তারপুরগামী শিখ তীর্থযাত্রীদের লক্ষ্য করে। ভারতীয় শিখদের যাতে বিরক্ত না করা হয় এবং তাঁদেরকে খলিস্তানিরা যাতে প্রভাবিত না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে পাকিস্তান সরকারকেই।

[বালাকোটে খতম ২০০ জঙ্গি! পাক সেনা আধিকারিকের ভিডিও ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement