সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্যোগের রাত। আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম আগেই ভেসে গিয়েছে। প্রতি মুহূর্ত কাটছে আতঙ্কের মধ্যে। এই বুঝি বন্যার করাল গ্রাসে জমি-বাড়ি সব খোয়া যায়। ঘর-বাড়ি ছেড়ে যে কোনও মূহূর্তে আশ্রয় নিতে হতে পারে ত্রাণ শিবিরে। আতঙ্কের মধ্যেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন কর্ণাটকের ইদ্দুকি জেলার কাঞ্জিকুঝি গ্রামের এক পরিবারের গৃহকর্তা পি মহানন। পরিবারের অন্যান্যরা ঘুমিয়ে গিয়েছিল আগেই।
রাত তখন প্রায় তিনটে। হঠাৎই বাড়ির পোষ্য রকির আওয়াজ শুনতে পেলেন মহানন। অন্যদিনের তুলনায় কুকুরটি যেন একটু বেশি ঘেউ ঘেউ করছিল। তাঁর আওয়াজে যেন অন্যদিনের তুলনায় উদ্বেগ বেশি ছিল। তবু, প্রথমে পাত্তা দেননি মহানন। কিন্তু তাতেও চিৎকার থামায়নি কুকুরটি। টানা কয়েক মিনিট ধরে চলে তাঁর ঘেউ ঘেউ। যত সময় যাচ্ছে তত যেন আশঙ্কার ছাপ বোঝাই যাচ্ছে তাঁর চিৎকারে। এবার সত্যিই রকির ঘেউ ঘেউ অস্বাভাবিক লাগে মহাননের। ‘‘আমি ওকে এভাবে চিৎকার করতে আগে কখনও শুনিনি। রীতিমতো হিংস্র আওয়াজ করছিল রকি। কিছু একটা গণ্ডগোল বুঝে বাইরে বেরিয়ে আসি। তখনই বুঝতে পারি বাইরের পরিস্থিতি।’’ পরে সাংবাদিকদের জানান পি মহানন।
বাইরে বেরিয়ে এসেই দেখেন ভয়াল ধসের মুখে পড়েছে তাদের বাড়ি। যে কোনও মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারেন তিনি আর তাঁর পরিবার। তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসনে মহানন। সঙ্গে ছিল তাঁর পরিবার আর অবশ্যই রকি। মহাননরা বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে যায় বাড়িটি। জলের তোড়ে এক্কেবারে গুড়িয়ে যায়। আর কয়েক মুহূর্তে দেরিতে বেরোলে হয়তো বাড়ির সঙ্গে তলিয়ে যেত গোটা পরিবার। যদিও, বাড়ির উপরতলায় বসবাসকারী এক বৃদ্ধার প্রাণ বাঁচানো যায়নি। আপাতত মহানন আর তাঁর পরিবার পাশের গ্রামের একটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। যে মহানন তাদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন সেই রকিও সঙ্গে রয়েছে মহাননের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.